প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১১:৫১
মেহেরপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে মঙ্গলবার সকালে ঘটে যায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা, যা পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নামিয়ে আনে। জেলা বনবিভাগ কার্যালয়ের সামনে দুইটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই গুরুতর আহত হন দুজন আরোহী। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন, যাদের একজন সরকারি সহকারী প্রকৌশলী ও অন্যজন এক কলেজছাত্র।
দুর্ঘটনাটি ঘটে সকাল ১০টার দিকে, যখন দুটি মোটরসাইকেল উচ্চগতিতে চলছিল। বনবিভাগের সামনের সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুখোমুখি ধাক্কায় লিপ্ত হয় তারা। সংঘর্ষ এতটাই তীব্র ছিল যে উভয় মোটরসাইকেল দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং আরোহীরা রাস্তায় ছিটকে পড়ে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাত পান।
নিহতরা হলেন মাহফুজুর রহমান কল্লোল (৪৭), জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী, যার বাড়ি মেহেরপুর সদর উপজেলার গহরপুর গ্রামে। অপরজন মো. আকমল হোসেন (২০), মেহেরপুর সরকারি কলেজের একজন শিক্ষার্থী, যার বাড়ি শহরের শেখপাড়ায়। উভয়েই শহরের বাসিন্দা হওয়ায় এলাকায় তাদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুই চালকই গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হন। সংঘর্ষের ফলে তাদের মোটরসাইকেল দুটিই ভেঙে চুরমার হয়ে যায় এবং আরোহীরা গুরুতর আঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকেন। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। তারা উভয় মোটরসাইকেল জব্দ করেছে এবং প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে বেপরোয়া গতি ও অসতর্কতাই এই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। বিস্তারিত তদন্তের পর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করা যাবে।
সড়কে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে, বিশেষ করে দ্রুতগামী বাইকের বেপরোয়া আচরণে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেক তরুণ। তাই সড়কে সতর্কতা ও নিয়ন্ত্রণ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন ও সুশীল সমাজ।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা পরিবার, সহকর্মী এবং সহপাঠীদের মাঝে গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে এবং এলাকায় নিরাপদ সড়কের দাবিও জোরালো হয়েছে।