প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১৫:৫৬
কুমিল্লার দেবীদ্বারে জান্নাতুল মাওয়া ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী শৌচাগারে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহত কিশোরের নাম মো. আরাফাত রহমান, বয়স ১৪ বছর। সে উপজেলার বাগমারা গ্রামের সোহেল রানার ছেলে এবং ওই মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার বিকেলে বরকামতা ইউনিয়নের বাগুর বাস স্টেশন সংলগ্ন ওই মাদ্রাসায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার আসরের নামাজ শেষে মাদ্রাসায় ফিরে আসে আরাফাত। এরপর সে মাদ্রাসা থেকেই একটি রশি নিয়ে শৌচাগারে প্রবেশ করে। দীর্ঘ সময় ধরে সে বাইরে না আসায় সহপাঠীরা তার খোঁজ নিতে গেলে দরজা বন্ধ দেখতে পায়। অনেক ডাকাডাকি ও ধাক্কাধাক্কির পরও সাড়া না পাওয়ায় বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।
পরবর্তীতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পায়, শৌচাগারের ভেন্টিলেটরের সাথে রশি ঝুলিয়ে আরাফাত আত্মহত্যা করেছে। মাদ্রাসার শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরাফাতকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের পরিবার বিষয়টি শুনে গভীর শোক প্রকাশ করলেও তাৎক্ষণিকভাবে আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেনি। মাদ্রাসার পক্ষ থেকেও ঘটনার কারণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। প্রতিষ্ঠাতা হাফেজ ক্বারী মাজহারুল হক সিরাজীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। একইসঙ্গে শিক্ষক পরিষদের কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খুলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দিন মো. ইলিয়াছ জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর নিহতের লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখনও নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
এই ট্র্যাজিক ঘটনার পেছনের কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। একইসঙ্গে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এমন করুণ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে।