প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ১৭:৪৯
নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে সেবার নামে চলমান অনিয়ম ও দালালচক্রের দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে অবশেষে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। বুধবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টার এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদক নওগাঁ কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মেহবুবা খাতুন রিতা। অভিযোগ ছিল, হাসপাতালে খাবার পরিবেশন, ওষুধ বিতরণ ও চিকিৎসক সেবায় চরম গাফিলতি রয়েছে, যা সেবা গ্রহীতাদের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা জানান, দিন পার হলেও অনেকে খাবার পান না। কেউ কেউ হোটেল থেকে কিনে খাচ্ছেন। চাঁদপুর গ্রামের সুমি আক্তার অভিযোগ করেন, পাঁচদিন ধরে তার ভর্তি ছেলেকে একবারও খাবার দেওয়া হয়নি। একই অভিজ্ঞতার কথা জানান কানমটকার বাসিন্দা আব্দুস সবুর, যিনি ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিনদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও ঠিকভাবে খাবার পাননি।
অভিযানে দুদক কর্মকর্তারা রোগী, স্বজন ও হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সরেজমিন ঘুরে দেখেন। তারা বরাদ্দের চেয়ে কম খাবার বিতরণ, ওষুধ কালোবাজারি, টেন্ডার শর্তে অনিয়ম এবং চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছেন। অভিযানের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে, যা বিশ্লেষণ করে কমিশনের কেন্দ্রীয় দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠানো হবে বলে জানান কর্মকর্তা মেহবুবা খাতুন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, বর্তমানে ২৫০ শয্যার অনুমোদন থাকলেও বাজেট এখনো ১০০ শয্যার ভিত্তিতে আসে, তাই সব রোগীকে খাবার সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। ডাক্তারদের উপস্থিতি নিয়েও কিছু সমস্যা রয়েছে, তবে দুদকের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমন অভিযানে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন রোগীরা। তাঁরা মনে করেন, এসব অভিযান অব্যাহত থাকলে স্বাস্থ্যসেবায় স্বচ্ছতা ফিরে আসবে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীর প্রতি দায়িত্বশীলতা বাড়বে এবং দুর্নীতির জায়গা কমে আসবে। সেবার মানোন্নয়নে এমন নজরদারি ভবিষ্যতেও নিয়মিত চায় এলাকাবাসী।