প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ১৮:১৩
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে দেড় বছর আগে ঘটে যাওয়া এক ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য অবশেষে উদঘাটন করেছে পুলিশ। নিহত মো. শরীফ একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবক, যিনি স্থানীয় বাজারে ঘোরাফেরা করে খরচ চালাতেন। তাকে হত্যা করে পুকুরপাড়ে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। ঘটনার পর দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও হত্যার কারণ ও আসামির কোনো সন্ধান ছিল না। কিন্তু মোবাইলের সূত্র ধরে অবশেষে এই রহস্যের জট খুলেছে তদন্তকারী দল।
হত্যাকাণ্ডের পরপরই পুলিশের পক্ষ থেকে অপমৃত্যুর মামলা নেওয়া হয়। তবে পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে হত্যার আলামত পাওয়া গেলে ১৪ ডিসেম্বর পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপর তদন্তে নামে কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিমল কর্মকার ও এসআই মহসিনের নেতৃত্বে একটি দল। তদন্তের ধারাবাহিকতায় তারা মোবাইল ফোন বিক্রির সূত্র ধরে আসামি নুরুল আলম রনিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হন।
পুলিশ জানায়, ২০২৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারির রাতে রনি সিগারেট চেয়ে শরীফের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে। টাকা না থাকায় সিগারেট কিনতে না পারায় বিরক্ত রনি পরে নিজের ঘরে গিয়ে টাকা নিয়ে এসে আবার বাজারে সিগারেট কিনে। এরপর পুকুরপাড়ে সিগারেট খেতে গেলে শরীফ সেখানে হাজির হলে আবার বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে রনি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মাদরাসার পেছনে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে। অজ্ঞান অবস্থায় শরীফকে লতাপাতার নিচে ঢেকে রেখে রনি সেদিন ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
ঘটনার পর রনি আর এলাকায় ফেরেনি, বরং পালিয়ে যায় চট্টগ্রামে। সেখানেই সে নিহতের মোবাইল ফোন ৩ হাজার ৫০০ টাকায় এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে পুলিশ মোবাইল ট্র্যাক করে তাকে শনাক্ত করে এবং অবশেষে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গতকাল আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় রনি এবং আদালতের নির্দেশে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা বিমল কর্মকার বলেন, একদম ক্লুলেস একটি মামলা থেকে আমরা কেবল একটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই আসামিকে শনাক্ত করতে পেরেছি। এটি পুলিশের নিরবিচার অনুসন্ধানের ফল। স্থানীয়দের মতে, এমন অকারণ ও তুচ্ছ বিষয় নিয়ে হত্যাকাণ্ড তাদের স্তম্ভিত করেছে। তারা এই ঘটনার দ্রুত বিচার এবং কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।