প্রকাশ: ৫ জুন ২০২৫, ২০:১
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় এক হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন একই পরিবারের তিন সদস্য। বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার ভাটই-ফুলহরি সড়কে ঈদের কেনাকাটা শেষে বাড়ি ফেরার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা, তার স্ত্রী সেলিনা খাতুন এবং পাঁচ বছরের ছেলে মাহিম।
গোলাম মোস্তফা ছিলেন শৈলকুপার হুদা মাইলমারী গ্রামের বাসিন্দা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পরিবার নিয়ে মোটরসাইকেলে করে শহর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। পথে ভাটই-ফুলহরি সড়কের সংযোগস্থলে একটি বালুবোঝাই ট্রাক তাদের গাড়িকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় শিশু মাহিম, আর গুরুতর আহত গোলাম মোস্তফা ও সেলিনা খাতুনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় ভাটই বাজারের ব্যবসায়ী তোজাম্মেল হক বলেন, মুহূর্তের মধ্যে সবকিছু শেষ হয়ে গেল। মানুষগুলো হাসিমুখে ঈদের বাজার করে ফিরছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত লাশ হয়ে ফিরলো। এলাকাজুড়ে এক ধরনের স্তব্ধতা নেমে এসেছে।
নিহতের প্রতিবেশীরা জানান, দুপুরেই তারা ঝিনাইদহ শহরে ঈদের বাজার করতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। একই পরিবারের তিনজন নিহত হওয়ায় মাইলমারী গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঈদের খুশি বদলে গেছে শোকে।
ঝিনাইদহ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। দুর্ঘটনার পর ঘাতক ট্রাকটি দ্রুত পালিয়ে যায়। ট্রাকটি শনাক্ত করে আটক করার চেষ্টা চলছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ভাটই-ফুলহরি সড়কটি বেহাল দশায় রয়েছে। প্রায়ই এখানে দুর্ঘটনা ঘটে, কিন্তু প্রশাসনের নজর পড়ে না। তারা দ্রুত সড়কের সংস্কার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানান।
ঘটনার পর থেকে নিহতদের আত্মীয়-স্বজনেরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কান্নার রোল ওঠে। অনেকেই এই ট্র্যাজেডিকে ঈদের আগেই পরিবারের জন্য সবচেয়ে বড় অন্ধকার বলে বর্ণনা করেছেন।
মরদেহ হস্তান্তরের পর এলাকায় দাফনের প্রস্তুতি চলছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারাও পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
মেটা কীওয়ার্ডস: