প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, ১৭:২৭
কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার সরদার পাড়া গ্রামের সুরুজ মিয়া (৬২) একজন সফল উদ্যোক্তা। কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি, তবে শারীরিক সমস্যার কারণে একসময় পেশা পরিবর্তন করে শুরু করেন চানাচুর তৈরি। আজ থেকে ৩৫ বছর আগে শুরু করা এই কাজে তিনি এখন একজন দক্ষ চানাচুর প্রস্তুতকারক। তার কাছে চানাচুর তৈরি আর বিক্রি করা এক ধরনের অভ্যস্ততা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি জানালেন, চানাচুর তৈরির জন্য ব্যবহৃত মশলা, বাদাম, ময়দা, এবং সয়াবিন তেলসহ অন্যান্য উপকরণ তিনি খুব যত্নসহকারে মেশান। এভাবে তৈরি হয় মুখরোচক চানাচুর, যা এখন তার এলাকার জনপ্রিয় একটি খাবারে পরিণত হয়েছে। সুরুজ মিয়ার এই শিল্পে তার স্ত্রী রুমিনা বেগমও সাহায্য করেন। এই স্বামী-স্ত্রী মিলে দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের হাতের তৈরি চানাচুর বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সুরুজ মিয়া তার চানাচুর বিক্রি করেন উলিপুর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে, যেখানে তাকে লাল টুপি পরিহিত অবস্থায় পাওয়া যায়। পূর্বে তিনি বিভিন্ন অঞ্চলেও চানাচুর বিক্রি করতেন, যেমন কুড়িগ্রাম, চিলমারী, দূর্গাপুর ও নাজিমখান। তবে বর্তমানে চাহিদা বাড়ায় তিনি শুধু উলিপুরে চানাচুর বিক্রি করেন। প্রতিদিন ২০ কেজি চানাচুর তৈরি করেন, যার থেকে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় হয়। যদিও এই আয়ের মধ্যে সংসার চালানো কঠিন, কিন্তু সুরুজ মিয়া তার ছোট কারখানা প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।
তিনি জানান, যদি তাকে সহায়তা দেওয়া হয়, তবে তিনি একটি ছোট আকারের কারখানা গড়ে তুলবেন। এতে এলাকার আরও কিছু মানুষ কাজের সুযোগ পাবেন এবং তার ব্যবসাও আরও সম্প্রসারিত হবে। সুরুজ মিয়ার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তার মেয়ে বর্তমানে বিবাহিত এবং ছেলেও টেইলরিংয়ের কাজ করে।
সুরুজ মিয়া তার জীবনযাত্রার জন্য খুশি এবং সন্তুষ্ট। তার এই জীবনের সংগ্রাম এবং পরিশ্রম এলাকার অনেকের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার কঠোর পরিশ্রম ও উদ্যোক্তা মনোভাব সত্যিই প্রশংসনীয় এবং তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা তার জীবনকে আরও উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে, এটা নিশ্চিত।
আমরা তার এই দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং তার ভবিষ্যতের সফলতার জন্য শুভকামনা জানাই।