বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় করা উচিত নয়, কেননা এতে জনগণের ভালোবাসা পাওয়া যাবে না। তিনি উল্লেখ করেন, কোনো নেতাকর্মী যদি অন্যায় করে, তবে জেলার নেতাদের তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে অথবা পুলিশে সোপর্দ করতে হবে। ফখরুল আরও বলেন, যদি বিএনপি নেতাকর্মীরা অন্যায় করতে থাকে, তবে দলকেও জনগণ ছুড়ে ফেলে দেবে, যেমনটি আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের মোলানী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গণসংযোগ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গণসংযোগে উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে ফখরুল আরও বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা যদি নির্যাতন কিংবা অন্যায়ে লিপ্ত হয়, তবে জেলার নেতাদের উচিত তাদের দমন করা এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া।
ফখরুল আরও বলেন, ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার যখন স্বৈরাচারের শাসন কায়েম করেছিল, তখন বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়েছিল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচারসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিল আওয়ামী লীগ। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের বাকস্বাধীনতা হরণ করে, ভোট চুরি করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। ফখরুল বলেন, এসবের প্রতিবাদ হিসেবে বিএনপি কখনও পালিয়ে যায়নি। বরং আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে তারা এসবের মোকাবিলা করেছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনি (শেখ হাসিনা) তো কেন পালিয়ে গেলেন? আপনি মামলা লড়ুন, আমাদের মতো আপনি দেশে এসে দাঁড়ান।”
এ সময় ফখরুল জনগণকে সতর্ক করে বলেন, যারা মনে করেন শেখ হাসিনা আবার দেশে ফিরে রাজনীতি করবেন, তারা ভুল করছেন। ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা তার দুঃশাসনের কারণে পালিয়ে গেছেন, আর জনগণ তাকে ক্ষমা করবে না। তিনি আরও বলেন, যেদিন হাসিনা দেশে ফিরবেন, জনগণই তাকে জবাব দেবে।
নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, জনগণের ভোটের কারণে বিএনপি সমর্থিত এলাকার উন্নয়ন হয়নি। ফখরুল বলেন, এসব এলাকায় জনগণকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তিনি জনগণকে আহ্বান জানান, “আমরা সবাই মিলে একটি ভালোবাসার দেশ গড়বো।”
গণসংযোগে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ প্রমুখ।