নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া উপজেলার হরণী ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জামসেদুল ইসলাম টুটুলকে ওই একই ইউনিয়নের জিয়া মঞ্চের সভাপতি পদে নির্বাচিত করা হয়েছে। এই ঘটনাটি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। টুটুলের জিয়া মঞ্চে পদ পাওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিভিন্ন মতামত প্রকাশ পেয়েছে।
জানা গেছে, জামসেদুল ইসলাম টুটুল দীর্ঘদিন ধরে হরণী ইউনিয়নের আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ছিলেন স্থানীয় সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর একজন নিকট সহকারী এবং বিভিন্ন সভা-সেমিনারে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেন। ২০১৮ সালের পর তিনি জিয়া মঞ্চের সঙ্গে জড়িত হয়ে এবং কিছু সময় পরে ওই সংগঠনের সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। গত ২৮ নভেম্বর, ২০২৪, জিয়া মঞ্চের হাতিয়া উপজেলার হরণী ইউনিয়ন শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়, যেখানে জামসেদুল ইসলাম টুটুল সভাপতি নির্বাচিত হন।
তবে, স্থানীয় একাধিক দলীয় নেতাকর্মী অভিযোগ করছেন যে, জামসেদুল ইসলাম টুটুল বিএনপি এবং তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মিদের দমন-পীড়নে সহযোগিতা করেছিলেন। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, এমন একজন ব্যক্তি কিভাবে বিএনপি'র লোক দাবি করে এবং জিয়া মঞ্চের মতো একটি সংগঠনের সভাপতি হন। তবে, টুটুল এই অভিযোগ নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী তাকে পদটি দিয়েছিলেন, যা তিনি কখনোই চাননি। তিনি আরও দাবি করেন যে, ওই সময়ে তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের নির্যাতন ও চাপ ছিল এবং সেসব কারণে তাকে দলত্যাগ করতে হয়েছিল।
এদিকে, হাতিয়া উপজেলা জিয়া মঞ্চের শাখার সাধারণ সম্পাদক রিপন চন্দ্র দাস বলেন, টুটুলকে ২০১৭ সালে স্বেচ্ছাসেবক লীগে সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল, তবে তারা এ বিষয়ে জানতেন না। বিষয়টি জানার পর তারা ওই কমিটি বাতিল করেছেন। তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের পর থেকে টুটুল বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন।
নোয়াখালী জেলা জিয়া মঞ্চের আহবায়ক মো: মনির হোসেন বলেন, টুটুল এক সময় ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন এবং ২০২০ সালের পর থেকে তার ফেসবুক পোস্টগুলোতে সরকারবিরোধী বিভিন্ন বিষয় প্রচারিত হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়ার পর পুরো কমিটি বাতিল করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর জিয়া মঞ্চের নেতাকর্মীরা সন্দিহান হয়ে পড়েছেন, এবং তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। টুটুলের এই পদোন্নতি নিয়ে আরও অনেক প্রশ্ন উঠেছে এবং স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে এর প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।