ঝালকাঠির নলছিটিতে দাখিল পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ৮ জন পরীক্ষার্থী বহিষ্কৃত হয়েছে। একই সঙ্গে নকলের সহযোগিতার অভিযোগে কেন্দ্র সচিব, হল সুপারসহ ৯ শিক্ষককে পরবর্তী সব পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) নলছিটি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের হদুয়া বৈশাখিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের ভেতরে পরীক্ষার্থীদের কাছে বই, নকলের কাগজ ও খাতা দেখে দেখে লেখার দৃশ্যপট প্রত্যক্ষ করেন তিনি। তখনই তাৎক্ষণিকভাবে ৮ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং দায়িত্বে অবহেলার কারণে ৯ শিক্ষককে অব্যাহতি দেন।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন—শ্রাবনী আক্তার, হাফিজুল ইসলাম, তাওহীদুল ইসলাম, মোস্থাফিজুর রহমান, রবিউল খান, রাইয়ান, আব্দুল্লাহ ও মো. সায়েম। তারা সবাই হদুয়া বৈশাখিয়া ফাজিল মাদরাসার শিক্ষার্থী।
অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষকরা হলেন—কেন্দ্র সচিব চরআমতলী ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আব্দুর রব, হল সুপার মো. হোসাইন, এবং সাতজন পরিদর্শক—ছৈলাবুনিয়া, তালতলা, পাইলট, ডেবরা, ভেরনবাড়িয়া, চরআমতলী ও তালতলা দাখিল মাদ্রাসার বিভিন্ন শিক্ষক।
ইউএনও নজরুল ইসলাম বলেন, “বই ও কাগজ দেখে দেখে লেখার কারণে ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং সহযোগিতার দায়ে ৯ শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমরা শুরু থেকেই কঠোর অবস্থানে রয়েছি, পরীক্ষায় কোনো অনিয়ম হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
অন্যদিকে, রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্র, গালুয়া ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ও কানুদাসকাঠি ইসলামিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকেও আরও ৪ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রাজাপুর ইউএনও রাহুল চন্দ জানান, "নকল রোধে আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি। কোনো অসদুপায় বরদাশত করা হবে না।"
স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে, বড়ইয়া ডিগ্রি কলেজ ও কানুদাসকাঠি ইসলামিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে প্রতিবছরই নকলের ঘটনা ঘটে। কানুদাসকাঠির কেন্দ্র সচিব মো. আঃ রাজ্জাক ও মাদ্রাসা সুপার আবুল কালামের বিরুদ্ধে নকলের সহযোগিতার অভিযোগও রয়েছে। তবে তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জেলা প্রশাসনের কঠোর মনোভাবের ফলে নলছিটি উপজেলায় এ পর্যন্ত ১৫ জন পরীক্ষার্থী বহিষ্কার এবং ১৮ জন শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের এমন তৎপরতায় অভিভাবক ও সচেতন মহল সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।