নোয়াখালী সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নে বুধবার রাতে চোলাই মদসহ যুবলীগের এক নেতাকে স্থানীয়রা ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। অভিযুক্ত নাছির উদ্দিন টিটু ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে পরিচিত।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে রাতে ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের আইয়ুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায়, যেখানে তাকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয়রা ধরেন। পরে তার কাছ থেকে কয়েক লিটার চোলাই মদ উদ্ধার হয় বলে জানানো হয়। এরপর তাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, টিটু দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং নিজেকে রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে বহু অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন। তারা আরও জানান, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় টিটু ছিল একপ্রকার ‘মাদক রাজ্যের গডফাদার’।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৫ আগস্ট একটি ঘটনার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। বুধবার রাতে আচমকাই এলাকায় তার উপস্থিতি ঘিরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুরনো ক্ষোভ থেকেই তাকে আটক করা হয়েছে এবং এলাকায় তার প্রভাব কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ এখন সাহস করে তার বিরুদ্ধে কথা বলছেন।
অন্যদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা, যিনি পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক, বলেন যে টিটুর বর্তমান কর্মকাণ্ডে মাদক সংশ্লিষ্টতা নেই এবং শুধুমাত্র যুবলীগে সক্রিয় থাকাতেই তাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। সুধারাম থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, টিটুকে ৪-৫ লিটার চোলাই মদসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
ঘটনার পর পুরো এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন এটি একটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফসল, আবার অনেকে বলছেন এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতেই এমন পদক্ষেপ প্রয়োজন ছিল।
এই ঘটনায় স্থানীয় রাজনীতি এবং মাদক ইস্যু আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিও উঠেছে জনমনে।