
রাজবাড়ীতে ছাত্র আন্দোলনে হামলা, ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০ জন কারাগারে

মইনুল হক মৃধা রাজবাড়ী, জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:৫৭
শেয়ার করুনঃ

আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ১০ নেতাকর্মীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত
রাজবাড়ীতে কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার মামলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ১০ নেতাকর্মীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে রাজবাড়ী ১নং আমলী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে বিচারক মো. তামজিদ আহম্মেদ তা নামঞ্জুর করেন।
আসামিরা হলেন—মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আজম মন্ডল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলীর ব্যক্তিগত সহকারী মো. গোলাম মালেক রিংকু, আবু বক্কর সিদ্দিক, মো. আবির শেখ, মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, যুবলীগ নেতা মুহাম্মদ ফিরোজ বিশ্বাস, চন্দনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রব, সাম্পা নিয়োগী, কাজী রাফি আহম্মেদ সৌরভ ও মো. মানিক সরদার।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী দাবিতে ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা রাজবাড়ী শহরের বড়পুল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। ওই সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা দেশীয় অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ অতর্কিতভাবে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হন।
এই ঘটনায় ৩০ আগস্ট রাজবাড়ী সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন রাজিব মোল্লা নামে এক শিক্ষার্থী। মামলায় রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলীসহ মোট ১৭০ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।

রাজবাড়ী কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. জসীম উদ্দিন জানান, “আসামিরা এর আগে হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। আজ তাঁরা নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে পুনরায় জামিন প্রার্থনা করেন। কিন্তু বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।”
এই ঘটনায় রাজবাড়ীজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের একাংশ আদালতের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, অভিযুক্তদের সমর্থকরা বিষয়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও দাবি করেছেন।
মানবাধিকারকর্মী ও শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, শিক্ষার্থীদের ওপর সহিংসতা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না এবং অপরাধীদের রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক, তাদের আইনের আওতায় আনাই হবে সুশাসনের বাস্তব রূপ।

