বরিশালের হিজলা উপজেলায় মেঘনা নদীর বিভিন্ন অংশে পরিচালিত এক যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ গলদা রেনুপোনা উদ্ধার, অবৈধ জাল জব্দ এবং ১১ জনকে আটক করে জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে হিজলার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মেঘনা নদীর বাউসিয়া, হরিনাথপুর, মাইজার চর ও ছয়গাঁ এলাকায় মৎস্য অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন, হিজলা কোস্ট গার্ড এবং হিজলা থানা পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়।
১৪ এপ্রিল রাত ১১টা থেকে ১৫ এপ্রিল দুপুর ১২টা পর্যন্ত দীর্ঘ এই অভিযানে মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ১১ জনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে মোট ৫৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
অভিযানকালে উদ্ধার করা হয় প্রায় ৫০ হাজার গলদা রেনুপোনা, যেগুলো পরে নদীতেই অবমুক্ত করা হয়। একইসাথে অভিযান পরিচালনাকারী দল ১ লাখ ৩২ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করে তা পুড়িয়ে বিনষ্ট করে। এছাড়া অবৈধভাবে ব্যবহৃত ১২টি চর ঘেরা জাল, ৭ শত বাঁশের খুঁটি এবং গলদা রেনু আহরণে ব্যবহৃত ৮২টি জাল ধ্বংস করা হয়।
অভিযানে আরও জব্দ করা হয় ১১টি অ্যালুমিনিয়ামের বড় পাতিল, বিভিন্ন আকারের প্লাস্টিকের ড্রাম, গামলা ও বালতি।
মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম বলেন, “মেঘনার জীববৈচিত্র্য ও জলজ সম্পদ সংরক্ষণের স্বার্থে আমাদের নিয়মিত এই অভিযান পরিচালনা করতে হচ্ছে। কোনোভাবেই গলদা রেনু আহরণকে সহ্য করা হবে না।”
এ সময় অভিযানে অংশ নেন হিজলা উপজেলার কোস্ট গার্ড কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. হুসনুর জামান সালামি, হিজলা থানার এসআই মাহাতাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা।
মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গলদা রেনুপোনা আহরণের ফলে জলজ পরিবেশ ধ্বংসের পাশাপাশি দেশের মৎস্য সম্পদ হুমকির মুখে পড়ে। এ কারণে এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে সরকার।
এই অভিযান মেঘনার জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মৎস্যসম্পদ সুরক্ষায় বড় ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।