একসাথে সাথে খাবার খেয়ে ভিক্ষা করতে বের হলাম; দুপুরে এসে দেখি ঝুলন্ত লাশ

কুমিল্লার দেবীদ্বার পৌরসভার পান্নারপুল এলাকায় ৯ এপ্রিল একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। আলামিন (৩২) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে দেবীদ্বার থানা পুলিশ। নিহত আলামিনের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার দক্ষিণ দিলালপুর গ্রামে। নিহত যুবকের বড় বোন মুমা বেগম জানান, তার ছোট ভাই এক যুগ আগে পারিবারিকভাবে বিবাহিত হয়েছিলেন, তবে তার স্ত্রীর সাথে সংসার চলেনি, কারণ আলামিন মাদকাসক্ত ছিলেন। গত দেড় মাস ধরে তিনি বোনের বাসায় বসবাস করছিলেন।

মুমা বেগম আরও জানান, আলামিন সাধারণত কোনো নিয়মিত কাজকর্ম করতেন না এবং সারাক্ষণ মাদক সেবন করতেন। তাকে একাধিকবার মাদক মামলায় পুলিশ আটক করে জেলে পাঠিয়েছিল। মুমা বেগম এবং তার পরিবারের অন্য সদস্যরা জীবিকার জন্য ভিক্ষা করে জীবনযাপন করতেন। বুধবার সকাল ১১টার দিকে, তিনি তার ভাইয়ের সাথে একসাথে খাবার খেয়ে ভিক্ষা করতে বের হন। কিন্তু দুপুর ১২টার পর বাড়ি ফিরে এসে তিনি ভাইয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখেন।

নিহতের মেজো বোনের জামাতা তবদল হোসেন জানান, আলামিনের ব্যক্তিগত জীবন কখনোই স্থিতিশীল ছিল না। এক যুগ আগে পারিবারিকভাবে তার বিবাহ হলেও সংসারে কোনো সুখী জীবন প্রতিষ্ঠা হয়নি। এছাড়া, তিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন, যা তার জীবনে একে একে নানা বিপদ ডেকে এনেছে।

দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শুভ কুমার শূর জানান, মাদকাসক্ত ও মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন আলামিনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে আত্মহত্যা ধারণা করা হচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায়, তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা, যেখানে পরিবার এবং সমাজের বিভিন্ন সামাজিক ও মানসিক সংকট উঠে এসেছে। মাদকাসক্তি এবং মানসিক সমস্যার ফলে একজন ব্যক্তির জীবন কেমন বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে, তা আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আলামিনের পরিবার এবং প্রতিবেশীদের জন্য এটি একটি কঠিন পরিস্থিতি, এবং সমাজের প্রতি এক অনুরোধ- মাদক এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন যাতে ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক ঘটনা রোধ করা যায়।