দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় মা ও তার ৭ বছর বয়সী মেয়ে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে দূলর্ভপুর গ্রামে এ ট্র্যাজেডি ঘটে। নিহতরা হলেন ববিতা রানী রায় (৩৫) ও তার কন্যা তনি রানী রায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে এনজিওর কিস্তির টাকা নিয়ে স্বামী রতন চন্দ্র রায়ের সঙ্গে ববিতার কলহ চলছিল। রতন বেকার থাকায় এবং অনলাইন ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত থাকায় সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। সন্ধ্যায় ববিতা মেয়েকে নিয়ে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে ফেলেন।
গ্রামবাসীরা তাদের উদ্ধার করে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক উভয়কে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ববিতাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য একই হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সিদ্দিক হোসেন জানান, আর্থিক সমস্যা ও দাম্পত্য কলহই এ трагеির মূল কারণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল গফুর বলেন, ঘটনার সঠিক কারণ জানতে তদন্ত চলছে।
এলাকাবাসী জানান, ববিতা রানী দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর বেকারত্ব ও জুয়ার আসক্তিতে অতিষ্ঠ ছিলেন। গত কয়েক মাসে তাদের বাড়িতে প্রায়ই ঝগড়া হতো। প্রতিবেশীরা বলেন, ববিতা কাউকে কিছু না বলে এ ভয়াবহ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারেন।
মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে পারিবারিক কলহ নিরসন ও আর্থিক সংকট মোকাবিলায় সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেন, হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা জরুরি।
পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরই ঘটনার সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এদিকে এ ঘটনায় গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা মা-মেয়ের শোকার্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন।