প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২:১
এক সময় শিমুল গাছের সমারোহে সুশোভিত ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল পরগনা। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের আনাচে-কানাচে, রাস্তার ধারে এবং বাড়ির আঙিনায় দাঁড়িয়ে থাকা শিমুল গাছগুলো বসন্তের বার্তা বয়ে আনত। গাছে ফুটে ওঠা টকটকে লাল ফুল যেন প্রকৃতির এক অনন্য রূপ দিত।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি শিমুল গাছের রয়েছে নানা উপকারিতা। এর তুলা দিয়ে তৈরি বালিশ ও তোষকের জুড়ি নেই। কাঠ ব্যবহার করা হয় দিশলাইয়ের কাঠি, বিল্ডিংয়ের সাটারিংসহ বিভিন্ন কাজে। কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে শিমুল গাছ তার অস্তিত্ব হারাতে বসেছে।
বিগত এক যুগে সরাইল উপজেলায় শিমুল গাছের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। একসময় বসন্ত এলেই চোখ ধাঁধানো লাল ফুলে সেজে উঠত পুরো এলাকা। দূর থেকে মনে হতো, বন-জঙ্গলে আগুন লেগেছে। কিন্তু এখন সে দৃশ্য আর দেখা যায় না।
স্থানীয়রা জানান, বাণিজ্যিকভাবে এ উপজেলায় শিমুল গাছের চাষ হয় না। এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে জন্মে। ফলে যত্নের অভাবে এবং কাঠ ব্যবহারের কারণে ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে এগোচ্ছে। অনেকেই ব্যক্তিগত প্রয়োজনে শিমুল গাছ কেটে ফেলছেন, কিন্তু নতুন করে কেউ চারা রোপণ করছেন না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিমুল গাছ সংরক্ষণ করা গেলে এটি যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনবে, তেমনি অর্থনৈতিক দিক থেকেও উপকার বয়ে আনবে। মানসম্মত তুলা উৎপাদন হলে বালিশ ও তোষক শিল্পে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হতে পারে।
সরাইলের প্রকৃতি প্রেমীরা শিমুল গাছ সংরক্ষণ এবং বাণিজ্যিকভাবে চাষের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে পরিকল্পিত শিমুল চাষ শুরু হলে এ গাছের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব।