প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩:৩৯
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় ভারতীয় গরুর একটি বড় চালানসহ পাঁচ চোরাকারবারিকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার ভোররাতে পাইকুরাটি পাঁকা সড়কে অভিযান চালিয়ে চারটি পিকআপ ভর্তি ১৯টি গরু জব্দ করা হয়। আটক ব্যক্তিরা হলেন মধ্যনগরের আলীয়ারপুর গ্রামের রাকিব, বলরামপুর গ্রামের ফাহিম ও রফিকুল ইসলাম, নেত্রকোনার রাতুল মিয়া ও মাসুদ খান। ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চোরাকারবারিরা দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতীয় গরু নিয়ে আসছিল। মধ্যনগর ও ধর্মপাশা সীমান্তে নিয়মিত এ ধরনের চোরাচালান চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ৪০টি ভারতীয় গরুসহ চার চোরাকারবারিকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেন। এরপরও চোরাচালান থেমে নেই।
জব্দ করা ১৯টি গরুর আনুমানিক মূল্য ৩৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বলে জানিয়েছে পুলিশ। গরুর পাশাপাশি সীমান্ত পথে মাদক, চিনি, কাপড়, কসমেটিকস, ফলমূল, সুপারি, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে আনা-নেওয়া হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান ঠেকাতে প্রশাসনের কড়া নজরদারির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। তারা অভিযোগ করেন, কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য চোরাকারবারিদের সহায়তা করছে, যার ফলে এই অবৈধ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, তারা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে এসব অপরাধী চক্রকে ধরার চেষ্টা করছে।
ধর্মপাশা ও মধ্যনগরের সীমান্ত এলাকায় গরু ছাড়াও ভারতীয় মদ, গাঁজা, ইয়াবা, শাড়ি, থ্রি-পিস, কম্বল, ওষুধসহ বিভিন্ন পণ্য পাচার করা হচ্ছে। অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে সুপারি, মাছ, মোবাইল ফোন সেটসহ নানা সামগ্রী ভারতে পাচার হচ্ছে। এই চোরাচালানের ফলে বৈধ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এলাকাবাসীর মতে, নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি চোরাচালান বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে আরও কঠোর হলে চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্য কমবে বলে তারা মনে করেন। পুলিশের দাবি, সীমান্তবর্তী এলাকায় অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘ধৃত পাঁচজন ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। চোরাকারবারি বন্ধে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
চোরাচালানের কারণে সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, কেবল গরু নয়, অন্য অবৈধ সামগ্রীর চোরাচালান রোধেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।