প্রকাশ: ৭ মে ২০২৩, ৩:২৮
আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। মাঠ পর্যায় একমাত্র আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ছাড়া অন্যকোন মেয়র প্রার্থী প্রচারণায় না নামলেও বড় ধরণের শো-ডাউন দিয়ে জানান দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। আজ সোমবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিম এবং আগামী ১২ মে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস বড় ধরণের শো-ডাউন করবেন বলে জানা গেছে।
তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চমক নিয়ে বরিশালে আসবেন বর্তমান সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এমনই আভাস পাওয়া গেছে। চাচা খোকন সেরনিয়াবাতের নির্বাচনী প্রচারণায় সাদিক নামলে অন্যান্য সব প্রার্থীদের হিসেব নিকেশ পাল্টে যাবে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। এদিকে প্রচারণায় পিছিয়ে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়াও দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিএনপি ঘরানার অনেক প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত ও তার সমর্থকরা ভোটের মাঠে প্রচার প্রচারণা ও গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সাধারণ মানুষের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত, গণসংযোগ ও মতবিনিময় করছেন তিনি। এছাড়া মহিলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দদের নিয়ে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্বামীর পক্ষে গণসংযোগ ও ভোটারদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করেছেন নৌকা মার্কার প্রার্থী খোকন সেরিনয়াবাতের সহধর্মীণী লুনা আবদুল্লাহ।
তবে মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে এযাবত নির্বাচনী সকল কর্মকা-ে খোকন সেরনিয়াবাতের সঙ্গে রয়েছেন দীর্ঘদিন রাজনীতি থেকে ছিটকে যাওয়া নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরণ ও স্থানীয় সাংসদ পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুকের অনুসারী নেতাকর্মীদের দিয়েই চলছে নৌকার প্রচারণা। সেখানে অনুপস্থিত নৌকার প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের ভাতিজা বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী নেতাকর্মীরা।
আর এসুযোগে অন্য দলের প্রার্থীরা সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছেন। তাছাড়া খোকন সেরনিয়াবাতের অনুসারী নেতাকর্মীরা সাদিক ঘরানার নেতাকর্মীরা মাঠে নামলে নৌকার পরাজয় হবে বলেও মন্তব্য করছেন। এমনকি মেয়র সাদিকের ইন্দনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ভোটে নেমেছেন বলেও গুঞ্জন ছড়াচ্ছে। তবে সব গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে মেয়র সাদিক একাধিক ভার্চুয়াল সভায় নৌকার বিজয়ে নেতাকর্মীদের কাজ করার আহবান জানিয়েছেন।
মেয়র সাদিকের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, আগামী ১৬ মে মনোনয়ন জমা দেয়ার আগেই বরিশালে আসছেন সাদিক। সাদিকের বরিশাল আগমনকে কেন্দ্র করে বড় ধরণের শো-ডাউন করার পরিকল্পনা করছেন তার অনুসারী নেতাকর্মীরা। এলক্ষ্যে কাজও শুরু হয়েছে। সূত্রটি জানায়, মেয়র সাদিক বরিশালে আসলেই তার অনুসারী নেতাকর্মীদের নিয়ে নৌকার বিজয়ে নির্বাচনে মাঠে নামবেন। আর তিনি মাঠে নামলে অন্যান্য দলের প্রার্থীদের সব হিসেব নিকেশ পাল্টে যাবে।
কেননা গত ৪ বছরে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও মহানগর আওয়ামীলীগকে একটি শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেছেন সাদিক। সাম্প্রতিক সময়ে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের বিশাল উপস্থিতি সেটাই প্রমান করে। আর নৌকার বিজয়ে একাট্টা দলের তৃণমূল থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। চাচা খোকন সেরনিয়াবাতের নির্বাচনী প্রচারণায় ওয়ার্ড পর্যায়েও সবধরণের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন সাদিক অনুসারী নেতাকর্মীরা। মেয়র সাদিক বরিশালে এসেই নৌকার পক্ষে মাঠে নামবেন এবং বিজয় নিয়ে ঘরে ফিরবেন বলেও সূত্রের দাবী।
প্রসঙ্গত: বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৬ মে, মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১৮ মে, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল ১৯ মে থেকে ২১ মে, আপিল নিষ্পত্তি ২২ থেকে ২৪ মে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৫ মে। প্রতীক বরাদ্দ ২৬ মে এবং ভোটগ্রহণ হবে ১২ জুন। বরিশাল সিটিতে বর্তমানে মোট ভোটার ২ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৫ জন।