তাবিজ নিতে গিয়ে ধরা পড়ল স্ত্রী হত্যাকারী স্বামী

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ী থানার বাইমাইল এলাকার ভাড়া বাড়ির তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে মোছা. রিনা খাতুনের (৩৭) এর মরদেহ শনিবার বিকেলে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে তার স্বামী পরিচয় দেয়া ব্যক্তির সন্ধান না পাওয়া এবং মৃতদেহের বিভিন্ন আলামতে পুলিশ প্রাথমিকভাবে রিনা খাতুনকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা করে।

এবার পালিয়ে থাকা সেই স্বামীকে বরিশাল থেকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি পুলিশ। তাও আবার বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে মসজিদের ইমামের কাছ থেকে তাবিজ নেয়ার সময় সিআইডি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে।

রোববার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা দুর্গা সাগর দিঘি সংলগ্ন মসজিদ থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার লালচাঁদ মোল্লা (৪০)সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর এলাকার মৃত হাসান মোল্লার ছেলে।

সিআইডির বরিশাল জেলা ও মেট্টো শাখার এসআই আবুল কালাম জানান, গ্রেফতার হওয়া লালচাঁন গাজীপুর নগরীর কোনাবাড়ীর বাইমাইল এলাকায় ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছিলো। সেই বাসা থেকে শনিবার বিকেলে রিনার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রিনা খাতুন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানার আন্দারকোঠা পাড়া এলাকার গেদু শেখের মেয়ে। এদিকে স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধারের আগ থেকেই উধাও হয়ে যায় লালচাঁন।

প্রাথমিকভাবে যেটকু জানাগেছে, স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামী লালচাঁন পালিয়ে মাধবপাশা দুর্গা সাগর এলাকায় আত্মগোপন করে। সিআইডির এলআইসি শাখা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়। পরে তাকে গ্রেফতারের জন্য সিআইডির বরিশাল মেট্টো ও জেলা শাখাকে দায়িত্ব দেয়। দায়িত্ব পেয়ে পরিদর্শক নুরুল আলম তালুকদারের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অভিযানিক দলের সদস্যরা লালচাঁনের বরাতে জানান, শনিবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে স্ত্রী রিনাকে সজোরে লাথি দিয়ে ঘরের দরজার বাইরে থেকে ছিটকানী আটকে বের হয়ে যায় লালচাঁন। কিছুক্ষন পর ঘরে ফিরে এসে দেখতে পায় স্ত্রীর মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে পড়ে রয়েছে। যখন বুঝতে পেরেছে স্ত্রী মারা গেছে তখন পালিয়ে বরিশাল চলে আসে।

সিআইডির অভিযানিক দলের সদস্য আকিদুর রহমান জানান, লালচাঁন এক সময় মাধবপাশা এলাকায় বাদশা সর্দারের গরুর ফার্মে চাকুরি করতো। শনিবার রাতে ফার্মের পাশের একটি ঘরে আসে। রাতে ওই ঘরে ছিলো। রোববার দিনভর এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করে। দুর্গা সাগর সংলগ্ন একটি মসজিদে মাগরিবের নামাজ শেষে ইমামের কাছে গিয়ে বিপদ-আপদ থেকে রক্ষার তাবিজ ও দোয়া চায়। এ সময় সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।