প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ২৩:২৭
বরিশাল নগরবাসীর নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। নগরজুড়ে সিসি ক্যামেরা বসানোর পাশাপাশি চালু করা হয়েছে ফেস ডিটেক্টর সফটওয়্যার। ফলে চিহ্নিত অপরাধীরা ক্যামেরার আওতায় আসলে সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা জানান দেবে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে। নগরীর ২২৫টি পয়েন্টে সিসিটিভি, ৮টি ফেস ডিটেকশন ও ৩টি ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলের পিটিজেড ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এতে ২৪ ঘণ্টাই নজরদারিতে থাকবে নগরী। ৯ সদস্যের প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের দিয়ে গঠন করা হয়েছে কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার) জানিয়েছেন, ফেস ডিটেক্টর একদিকে অপরাধীদের চিহ্নিত করবে, অপরদিকে কোন অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংঘটিত হওয়ার পূর্বেই তা প্রতিরোধ করা যাবে।
সূত্রমতে, নগরীতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে যানজট, চুরি, ছিনতাই, সামাজিক অপরাধসহ নানা দুর্ঘটনা নাগরিকদের বিপাকে ফেলছে। এসব ঠেকাতেই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মাঠে নেমেছে নগর পুলিশ। এরই মধ্যে নগরীর ২২৫টি পয়েন্টে সিসিটিভি, ৮টি ফেস ডিটেকশন ও ৩টি ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলের পিটিজেড ক্যামেরা বসানো হয়েছে। অপরাধ দমন ও সংঘটিত ঘটনার তথ্য উদঘাটনসহ চিহ্নিত অপরাধী মহানগরীতে ঢুকলেই সংকেত আসছে পুলিশের কন্ট্রোল রুমে। ইতোমধ্যে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছিনতাইয়ের নাটক, চুরি, সড়ক দুর্ঘটনাসহ অর্ধ শতাধিক রহস্য উন্মোচন হয়েছে। অপরাধ দমনে ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে শিগগিরই আরও ৫০০ স্থান এমন প্রযুক্তির আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মোঃ রাসেল জানান, বিএমপি’র কন্ট্রোল সেন্টার প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্যই ছিল বরিশাল নগরীকে নিরাপদ রাখা এবং অপরাধীদের গমনাগমনকে নিয়ন্ত্রণ করা। তিনি বলেন, বরিশালে কেউ এখন আর অপরাধ করে পার পাবে না। অসংগতি যেখানেই ঘটুক, মুহূর্তেই সেখানে হাজির হবে পুলিশ।
অপরাধ দমনে সুধী সমাজ বরিশাল পুলিশের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও কারো ব্যক্তি স্বাধীনতা যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখার পরামর্শ দিয়েছেন সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বরিশালের সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদা।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার) বলেন, ফেস ডিটেক্টরের মাধ্যমে অপরাধীদের যেমন করে চিহ্নিত করে ধরা যায়, তেমনি অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে প্রতিরোধক হিসেবেও কাজ করে এটি। তিনি বলেন, মূলত: নগরবাসীর নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার পাশাপাশি নগরীকে অপরাধমুক্ত করতে কাজ করছে মেট্রোপলিটন পুলিশ।
উল্লেখ্য, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ওই ক্যামেরাগুলো চালু হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে সেগুলো বিকল হয়ে পড়ে। বর্তমানে নগরীতে সেই ক্যামেরাগুলোর কোনো অস্তিত্ব নেই।