
বিএমপি’র প্রত্যেক থানা যেন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়

প্রকাশ: ৭ অক্টোবর ২০২১, ২৩:৯

বরিশাল মেট্রোপলিটন চারটি থানা যেন প্রতি মাসের নির্দিষ্ট তারিখে পুলিশ কমিশনার কার্যালয় হয়ে ওঠে। কেননা প্রতি মাসের নির্দিষ্ট তারিখে প্রতিটি থানায় অনুষ্ঠিত হয় ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠান। যে অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনারসহ মেট্রোপলিটন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থেকে আপামর জনসাধারণের কথা শোনেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। এছাড়া সমাজের অবহেলিত ভুক্তভোগী যারা সহজেই তাদের নানান অভিযোগের কথা সরাসরি বলতে পারেন। আর বিএমপি’র পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার) এর উপস্থিতিতে শুধু তাদের পারিবারিক, সামাজিক সমস্যার কথা-ই নয়, পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধেও যদি কোন অভিযোগ থাকে তা বলতে নির্দিধায় বলতে পারছে। প্রত্যেক মাসের নির্দিষ্ট তারিখে ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষ তাদের নানান অভিযোগ, সমস্যা বলতে পারায় তারাও খুশি।
ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে সাধারণত তিন ধরনের আবেদন গুরুত্ব সহকারে শোনা হয়। যেমন: ভুক্তভোগীর কথা, সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষায় সাধারণ জনগণের গঠনমূলক পরামর্শ এমনকি কোন পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অনিয়ম রয়েছে কিনা তা সরাসরি শুনে সে অনুযায়ী গৃহীত ব্যবস্থা সকলের সামনে পর্যালোচনা করা। বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) কাউনিয়া থানায় অনুষ্ঠিত হলো ওপেন হাউজ ডে।

অনুষ্ঠাতে প্রধান অতিথি বিএমপি কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার) বিগত ওপেন হাউজ ডে সভার কার্যবিবরণী তথা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে আগত ভুক্তভোগীর কথা সরাসরি শুনে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমরা প্রো-একটিভ পুলিশ, সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বস্তরের সুনাগরিকদের সহযোগীতায় আগুয়ান ভুমিকায় কাজ করে থাকি”। “আমরা চাকুরী সুবাদে এখানে এসেছি। এ সমাজ আপনাদের, সমাজের সর্বস্তরের সুনাগরিকদের সহযোগিতায় আমরা সামাজিক ভারসাম্য রক্ষায় সমাজে বসবাসরত প্রতিটি পরিবারের দ্বারে দ্বারে গিয়ে শান্তি স্থাপন করে থাকি। প্রধান অতিথি আরো বলেন, ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে কে সমাজপতি আর কে সাধারণ এখানে সেধরণের কোন ভেদাভেদ নেই। প্রান্তিক মানুষের নিরাপত্তার চাহিদা পূরণই আমাদের কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “আপনার সন্তানকে আইনমান্যাকারী সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা স্কুল ভিজিটিং প্রোগ্রাম, কমিউনিটি পুলিশিং, বিট পুলিং সভা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমগুলো শুরু করেছি। তবে আপনার সন্তানের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রাখুন। সকলের সজাগ আন্তরিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমাজের যাবতীয় কুকর্মের বিষবাষ্প নিরাময় করে নিরাপদ মেট্রোপলিটন এলাকা উপহার দেয়া সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিএমপি কমিশনার।
গভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোঃ এনামুল হক বলেন, মাদক সহ সকল অশুভের নিরাময়ে সামাজিক শক্তি কাজে লাগাতে হবে, সামাজিকভাবে জোড়ালো ভূমিকা রাখতে হবে। জনগণের দোরগোড়ায় উত্তম, নির্ভেজাল সেবা নিশ্চিত করতে আপনাদের সহযোগিতা পেলে এলাকায় অপরাধ দানাবাঁধার আগেই তা নির্মূল করা সম্ভব।

উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোঃ জাকির হোসেন মজুমদার পিপিএম বলেন, এই ওপেন হাউজ ডে যেকোন অভিযোগ অনিয়ম জানানোর সুবর্ণ সময়। প্রতিটি সমস্যার নির্ভেজাল সেবা আপনাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই। সমাজের নানাবিধ অপরাধ ও চুরি বন্ধে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজ নিজ স্থাপনায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে সতর্ক থেকে শান্তি স্থাপনে পুলিশকে সহযোগিতার আহবান জানান তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোঃ ফজলুল করীম, সহকারী পুলিশ কমিশনার (এয়ারপোর্ট এন্ড কাউনিয়া থানা) মোঃ রবিউল ইসলাম শামীম, পুলিশ পরিদর্শক (ট্রাফিক) বিদ্যুৎ চন্দ্র দে, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ ছগির হোসেনসহ সুশীল সমাজের সর্বস্তরের প্রতিনিধি এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার ব্যক্তিবর্গ।


