
বৃষ্টি উপেক্ষা করে দৌলতদিয়ায় যৌনকর্মীর জানাজা

প্রকাশ: ৮ জুন ২০২১, ১৪:৩

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলায় দেশের বৃহত্তম যৌনপল্লীতে আবারও মৃত্যুর পর এক যৌনকর্মীর জানাজা ও দাফন হলো। সোমবার (৭ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের যৌনপল্লি সংলগ্ন গোরস্থানের মাঠে মোছাঃ জোসনা বেগম (৪৫) জানাজার নামাজ হয়। পরে তাকে যথাযথ ধর্মীয় রীতিতে দাফন করা হয়।
জানাযায়, মোছাঃ জোসনা বেগম কিছু দিন ধরে অসুস্থ থেকে গতকাল সোমবার যৌনপল্লীতে তার বাড়ীতে ষ্ট্রোক করে মারা যান।এবার যৌনকর্মীর জানাজার নামাজ পড়িয়েছেন গোয়ালন্দের বাবু নামের একজন ইমাম। জানাজায় অংশ নেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ্ আল তায়াবীর, এসআই মোঃ জাকির হোসেন ও থানার অন্যন্যা সদস্যারা সহ স্থানীয় অনেকেই।

ওসি আব্দুল্লাহ্ আল তায়াবীর জানান, ‘ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মো. হাবিবুর রহমান স্যার দৌলতদিয়া যৌনপল্লির মানুষের মানবিক দিকগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই নির্দেশনা মোতাবেক রাজবাড়ী জেলা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। ধর্মীয় বিষয়টি কারও ওপর চাপানো ঠিক নয়, তাই গোয়ালন্দ ইমাম কে দিয়ে এইবারের জানাজার নামাজ পড়ানো হয়েছে। আগামীতেও ধর্মীয় রীতি মেনে এই জানাজা ও দাফনের কাজ অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশিকুর রহমানের উদ্যোগে ধর্মের রীতি মেনে এক যৌনকর্মীর জানাজা ও দাফন হয়। এর আগে এতকাল যৌনকর্মীদের মৃত্যুর পর তাদের লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া বা মাটি চাপা দেওয়ার প্রথা ছিল।

সেই প্রথা ভেঙে প্রথমবারের মতো যৌনকর্মী হামিদা বেগমের জানাজা ও দাফন হয়। তবে ইসলাম ধর্মের রীতি মেনে যৌনকর্মী হামিদা বেগমের জানাজার নামাজ পড়ানো নিয়ে স্থানীয়ভাবে দ্বিমত হওয়ায় ইমাম গোলাম মোস্তফা এবার রিনা বেগমের জানাজার নামাজ পড়াননি।মুসলিম। আমরা মারা গেলে যেন আমাদের জানাজা আর দাফন হয়। সেই দাবি মেনে এখন আমাদের জানাজার ব্যবস্থা হয়েছে, এটি ভাগ্যের ব্যাপার। আমরা যে কেউ মারা গেলে থানায় খবর দেই।
আমাদের কেউ মারা গেলে এখন প্রশাসনের সহযোগিতায় ধর্মীয়ভাবে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। আমি রাজবাড়ী জেলা এসপি এম এম শাকিলুজ্জামান স্যার ও বর্তমান ওসি আব্দুল্লাহ্ আল তায়াবীর স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মো. আব্দুল্লাহ্ আল তায়াবীর জানান, বিগত প্রায় দেড় বছর ধরে ধর্মীয়ভাবেই যৌনকর্মীদের দাফন ও সৎকারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুলিশ এব্যাপারে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।


