প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২১, ২০:৫৩
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ভাংচুরে বাধা দেয়ায় নিলুফা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে শ্লীলতাহানী করে মারধরের পর গলা টিপে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে তারই ভাসুর, ভাবী, ভাতিজা ও ভাতিজার স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় গত বুধবার (২১ এপ্রিল) আহত নিলুফা বেগম বাদী হয়ে ভাসুর রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে আরও তিন জনের নামে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার উত্তর পারুলিয়া এলাকার ২নং ওয়ার্ডে এ ঘটনাটি ঘটে। আহত ওই গৃহবধূ বর্তমানে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার উত্তর পারুলিয়া এলাকার ২নং ওয়াডের্র মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে ও আহত গৃহবধূর ভাসুর রফিকুল ইসলাম(৪৫), স্ত্রী ফেরোজা বেগম (৪২), ছেলে রিপন (২৪) এবং পূত্রবধূ সুমি বেগম(২২)। আহত নিলুফা বেগম উপজেলার একই এলাকার অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই সাদেকুল ইসলামের স্ত্রী।
জানা গেছে, অভিযুক্তদের বাড়ির পাশেই ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী বসবাস করেন। অভিযুক্ত ও গৃহবধূর স্বামী আপন দুই ভাই। তাদের মাঝে দীর্ঘ দিন ধরে পারিবারিক দ্বন্দ চলছিলো। এরই মধ্যে গত (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যার দিকে গৃহবধূ নিলুফা বেগম বাড়িতে একা ছিলেন। সেই সুযোগে অভিযুক্তরা নিলুফার বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ির বন্ধ গেট ভাংচুর করে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়।
এ সময় নিলুফা বেগম তাদের বাধা দেয় ও ভাংচুরের কারন জানতে চায় এবং তাদের বকাবকি করেন। এতেই অভিযুক্তরা উত্তেজিত হয়ে অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে নিলুফা বেগমের চুলির মুটি ধরে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে এবং মারধর শুরু করেন। শুধু মারধরেই নয় এর এক পর্যায়ে ভাসুর রফিকুল ইসলাম নিলুফা বেগমের গলা টিপে ধরেন। এ সময় নিলুফার আৎচিতকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরে আহত অবস্থায় নিলুফাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, নির্যাতনের স্বীকার নিলুফা ব্যাথার যন্ত্রনায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছে। তার গলা টিপে ধরায় লালচে দাগ পড়েছে।
এ সময় জানতে চাইলে তিনি বলেন তাদের ভাইয়ে ভাইয়ে বিবাদ। এর জন্য আমার কি দোষ। আমাকে বাড়িতে একা পেয়ে মারধর করতে হবে। অতপর আমাকে আমার ভাসুর গলা টিপে ধরেন। স্থানীয়রা ছুটে না আসলে আমি হয়তো আজ বেচে থাকতাম না। আমি তাদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে ওই গৃহবধূর স্বামী সাদেকুল ইসলাম বলেন, আমি সেই সময় বাইরে ছিলাম। খবর পেয়ে ছুটে যাই। গিয়ে শুনি আমার স্ত্রীকে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামের নম্বরে একাধিক বার কল করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।এ বিষয়ে জানতে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. হিরনময় বর্মনের সেলফোনে একাধিকবার কলা করা হলে তিনি কলটি কেটে দেন।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, এ ঘটনায় পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
#ইনিউজ৭১/জিয়া/২০২১