রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া রেলস্টেশন থেকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে গোয়ালন্দ রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে স্টেশনের প্লাটফর্মে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বরাতে জানা যায়, প্রায় পাঁচ দিন আগে এই ব্যক্তি ট্রেনে করে স্টেশনে আসে। এরপর কে বা কারা তাকে স্টেশনে বসিয়ে রেখে চলে যায়। তাকে কেউ চিনতে পারেনি এবং তিনি চলাফেরাতেও অক্ষম ছিলেন। স্থানীয় লোকজন খাবার দিলে তিনি সেখানেই বসে খেতেন। তিনি ভালোভাবে কথাও বলতে পারতেন না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তার কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় স্থানীয়রা দেখতে পান তিনি মারা গেছেন।
গোয়ালন্দ ঘাট স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত পয়েন্টস ম্যান আবু রায়হান জানান, এই ব্যক্তি স্টেশনে পাঁচ দিন ধরে অবস্থান করছিলেন। তাকে তার নাম ও ঠিকানা সম্পর্কে অনেকবার জিজ্ঞাসা করা হলেও তিনি কিছুই জানাতে পারেননি। ফলে তার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
গোয়ালন্দ রেলওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ আ. রাজ্জাক জানান, ওই ব্যক্তি শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন এবং কথা বলতে পারতেন না। এ কারণে তার পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। পুলিশ তার পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
স্টেশনে উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, অজ্ঞাত এই ব্যক্তি সারাদিন প্লাটফর্মেই বসে থাকতেন। চলাফেরার অক্ষমতার পাশাপাশি তিনি কারও সঙ্গেও সেভাবে যোগাযোগ করতে পারতেন না। খাবার দেওয়ার পর তিনি তা গ্রহণ করতেন, তবে তার অসুস্থতা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছিল।
রেলওয়ে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তারা আশেপাশের থানাগুলোতে যোগাযোগ করে তার পরিচয় নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এদিকে স্থানীয়রা জানান, স্টেশনে এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক।
স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেই এ ব্যাপারে পুলিশের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। তবে তারা আরও দাবি করেছেন, রেলস্টেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অসহায় মানুষদের জন্য একটি আশ্রয়কেন্দ্র থাকা উচিত, যাতে এই ধরনের পরিস্থিতি এড়ানো যায়।
মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা না গেলে তাকে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় দাফনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে পুলিশ। এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।