রামগড়ে বিষপানে গৃহবধূর আত্মহত্যা, রহস্যজাগানিয়া মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
আরিফুল ইসলাম মহিন -খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৩শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৭:২৫ অপরাহ্ন
রামগড়ে বিষপানে গৃহবধূর আত্মহত্যা, রহস্যজাগানিয়া মৃত্যু

খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় বিষপান করে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল বেলা সোমা আক্তার (২৬) নামের এই গৃহবধূ বিষপান করেন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তার মৃত্যু হয়। 


সোমা আক্তার রামগড় উপজেলার ১ নম্বর রামগড় ইউনিয়নের ওয়াইফাপাড়া গ্রামের আবু তাহেরের স্ত্রী ছিলেন। তিনি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামের আবদুল মালেকের মেয়ে। ৮ বছর আগে আবু তাহেরের সঙ্গে তার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। 


নিহতের স্বজন মো. মনতাজ উদ্দিন জানান, সোমা বিষপান করার পর তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তারা জানিয়েছেন, সোমার বিষপান করার কোনো নির্দিষ্ট কারণ তারা জানেন না। স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন সোমা, কিন্তু কেন তিনি এহেন চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিলেন, তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে। 


রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন বলেন, 'নিহত গৃহবধূ সোমা আক্তারের মৃত্যুর ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তার মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।' 


ঘটনার পর রামগড় থানার পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য সোমার মরদেহ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। একই সময়ে রামগড় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করেছে। 


স্থানীয়রা জানায়, সোমার মৃত্যুর পর তার পরিবারের সদস্যরা অত্যন্ত শোকাহত। তবে মৃত্যুর কারণ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ধারণা রয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন পারিবারিক কলহের কারণে সোমা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন, যা তাকে এই চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে। আবার অনেকেই বলছেন, সোমার মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে, যা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। 


রামগড় থানার এসআই মহসিন মোস্তফা জানিয়েছেন, 'ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।' তিনি আরো বলেন, 'এখনো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।' 


এ ঘটনাটি পুরো এলাকায় শোকের ছায়া ফেলেছে। সোমার পরিবার এবং স্বামী আবু তাহের এই অপ্রত্যাশিত ঘটনা থেকে শোকগ্রস্ত। এলাকাবাসীও এই ঘটনার প্রতিবাদে তাদের সহানুভূতি জানিয়েছেন। 


এদিকে, সোমার মৃত্যু এক ধরণের সামাজিক সংকেত দেয়, যেখানে পারিবারিক সমস্যাগুলি এবং মানসিক চাপ কীভাবে জীবনে এত বড় পরিবর্তন আনতে পারে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সমাজে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া এবং এর কারণে মানুষের জীবনে অকাল মৃত্যু অনেকের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।