স্ত্রীর তালাকের শোকে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে কর্মচারীর আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি- জামালপুর
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৩শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৭:২১ অপরাহ্ন
স্ত্রীর তালাকের শোকে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে কর্মচারীর আত্মহত্যা

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের শোক সইতে না পেরে সানোয়ার হায়দার নামে এক এলজিইডির কার্যসহকারী ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে সরিষাবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনের কাছে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। সানোয়ার হায়দার নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা এবং সরিষাবাড়ী উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ে বন্যা প্রকল্পে কার্যসহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। 


স্থানীয় এবং সহকর্মীদের ভাষ্যমতে, সানোয়ারের পারিবারিক জীবনে দীর্ঘদিন ধরে দাম্পত্য কলহ চলছিল। প্রায় এক সপ্তাহ আগে তার স্ত্রী তাকে তালাক দেন। এই ঘটনার পর থেকে সানোয়ার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি রেললাইনের পাশ দিয়ে হাঁটছিলেন। এ সময় চট্টগ্রাম থেকে ভুয়াপুরগামী ৩৭ আপ মেইল ট্রেনটি এলে তিনি হঠাৎ ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেন। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। 


এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক আশীষ চন্দ্র দে জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ ঘটনাটি গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করছে। 


এলজিইডি সরিষাবাড়ীর উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাহিদুল ইসলাম ঘটনার বিষয়ে শোক প্রকাশ করে জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক এবং হৃদয়বিদারক। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সানোয়ারের এমন মৃত্যুতে সহকর্মীদের মধ্যেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 


স্থানীয়রা জানায়, তালাকের পর থেকে সানোয়ার নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন এবং বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন। কেউ তার এ ধরনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পূর্বাভাস পায়নি। এ ঘটনায় তার পরিবার এবং এলাকাবাসী মর্মাহত। 


ময়নাতদন্ত শেষে সানোয়ারের মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ উভয়েই ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছে এবং আত্মহত্যার পেছনে মানসিক স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। 


এ ঘটনার পর রেললাইনের আশপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং এমন পরিস্থিতি এড়াতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আত্মহত্যার এই ঘটনা কেবল ব্যক্তিগত ক্ষতিই নয়, সমাজের জন্যও একটি দুঃখজনক বার্তা বহন করে।