প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০:৪১
আকস্মিকভাবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে দক্ষিণাঞ্চলে শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টিপাত, যার প্রভাবে অন্তত ১১টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় উপকূলবর্তী জনপদে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা ও প্লাবনের আশঙ্কা। তবে ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে নৌ কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেলে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বর্ষা মৌসুমে বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর পানি প্রবাহ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী ১১টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেইসঙ্গে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বাতাসের গতি ছিল ১০ কিলোমিটার। এ অবস্থায় পরিস্থিতি আগামী দুই থেকে তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া বিভাগ।
এছাড়া পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত এবং নদীবন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এদিকে, ভোলা-ইলিশা রুটের লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। যেমন, ভোলার তজুমদ্দিনে সুরমা-মেঘনা পয়েন্টে ১৬৫ সেন্টিমিটার, দৌলতখানে ৮২ সেন্টিমিটার এবং বরগুনার বেতাগীতে ৫২ সেন্টিমিটার ওপরে।
বরিশালের কীর্তনখোলায় ৩০ সেন্টিমিটার, ঝালকাঠির বিষখালী পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার, পিরোজপুরের বলেশ্বর পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার ওপরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এসব এলাকায় নিম্নাঞ্চল ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে এবং জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ ও আমতলী উপজেলার বুড়িশ্বর/পায়রা পয়েন্টে যথাক্রমে ২৯ ও ১৮ সেন্টিমিটার ওপরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বরগুনা ও পাথরঘাটায় বিষখালী পয়েন্টে ৩১ ও ৪৫ সেন্টিমিটার এবং কচা নদীর উমেদপুর পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার ওপরে পানি বইছে।
সাধারণ মানুষদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নৌ চলাচল, কৃষি জমি ও বসতবাড়িতে পানি উঠার কারণে। পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কায় স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ নজরদারি বাড়িয়েছে।