'টিউলিপ সিদ্দিককে মন্ত্রী বানানোর পেছনে লেবার পার্টির স্বার্থ: দ্য গার্ডিয়ান'

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার ১৫ই জানুয়ারী ২০২৫ ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন
'টিউলিপ সিদ্দিককে মন্ত্রী বানানোর পেছনে লেবার পার্টির স্বার্থ: দ্য গার্ডিয়ান'

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ নিয়ে একাধিক বিতর্কের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ক্ষমতাসীনদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই টিউলিপকে যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি দমন মন্ত্রী করা হয়েছিল। মঙ্গলবার টিউলিপের পদত্যাগের পর এই প্রতিবেদন প্রকাশ পায়।  


গার্ডিয়ান জানায়, লেবার পার্টি ও ক্ষমতাসীনদের টিউলিপকে রাজনৈতিক ব্যানার হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতা স্পষ্ট ছিল। শেখ হাসিনার সরকারের ক্ষমতার সময় টিউলিপের পারিবারিক প্রভাব তার গ্রহণযোগ্যতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। তবে শেখ হাসিনার সরকারের দুর্নীতির সাথে টিউলিপের নাম জড়ানো এবং বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা তাকে নিয়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।  


দুদক পূর্বাচল নতুন শহরে প্লট বরাদ্দে টিউলিপের প্রভাব বিস্তারের প্রমাণ পেয়েছে। এ বিষয়ে টিউলিপসহ শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা এবং তাদের সন্তানদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার অভিযোগে টিউলিপের দুটি ব্রিটিশ ফ্ল্যাট ক্রয় এবং ক্ষমতার অপব্যবহার উল্লেখ করা হয়েছে।  


প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার সরকার প্রতাপশালী অবস্থায় থাকাকালীন টিউলিপের মন্ত্রী হওয়া সহজ হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় লেবার পার্টির নির্বাচনী প্রচারে ব্যাপক সক্রিয়তা দেখা যায়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ডাউনিং স্ট্রিটের লোকজন টিউলিপের মন্ত্রিত্ব নিয়ে হয়তো দ্বিতীয়বার ভাবতে বাধ্য হতেন।  


এক লেবার এমপি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এটি ছিল ক্ষমতাসীনদের কৌশল। টিউলিপ বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক পরিবার থেকে এসেছেন, যার বিশাল প্রভাব ও অর্থনৈতিক সংযোগ রয়েছে। ফলে তার মন্ত্রী হওয়া নিয়ে বিতর্ক ছিল অনুমিত।  


টিউলিপের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মসহ নানা অভিযোগ থাকলেও ব্রিটিশ নৈতিক মানদণ্ড পরীক্ষায় সরাসরি অপরাধ প্রমাণ হয়নি। ম্যাগনাস তদন্তে টিউলিপের বিরুদ্ধে কোনো নির্দিষ্ট অপরাধ খুঁজে পাননি। তবে তিনি তার বিরুদ্ধে থাকা প্রশ্নগুলো পুরোপুরি উড়িয়ে দেননি।  


গার্ডিয়ান জানায়, এসব বিতর্ক ও অভিযোগের মধ্যেই টিউলিপ মন্ত্রিত্ব থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। তার পদত্যাগের পর রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে।  


বাংলাদেশে টিউলিপের পদক্ষেপ ও তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমেও এই ঘটনা বেশ গুরুত্ব পেয়েছে।