সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরলেন গ্রেফতার ১০ প্রবাসী

গত বছরের জুলাই আন্দোলনের পর সৌদি আরবে গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশি ১২ জন প্রবাসীর মধ্যে ১০ জন দেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সৌদি এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তারা অবতরণ করেন। দেশে ফিরে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে দেখা হওয়ায় তাদের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস দেখা যায়।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের খবরে সৌদি আরবে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা আনন্দ উদযাপন এবং প্রীতিভোজের আয়োজন করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৌদি কর্তৃপক্ষ কড়া নজরদারি চালিয়ে ১২ জন প্রবাসীকে আটক করে। আটকের পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয় এবং দীর্ঘ ৮ মাস তারা বন্দি অবস্থায় ছিলেন।

ফেরত আসা প্রবাসীরা জানান, এই আট মাস তাদের জন্য ছিল দুঃসহ এক অধ্যায়। নির্জন কারাগারে পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নানা অনিশ্চয়তা ও মানসিক চাপে দিন কাটাতে হয়েছে তাদের। তারা আরও জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের সহযোগিতা ও নানামুখী প্রচেষ্টার ফলেই তারা মুক্তি পেয়েছেন এবং নিরাপদে দেশের মাটিতে ফিরতে পেরেছেন।

এদের মধ্যে ১০ জন ফিরলেও বাকি দু’জন এখনও সৌদি কারাগারে রয়েছেন। তাদের দেশে ফেরাতে বিলম্ব হচ্ছে কারণ পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং কিছু কাগজপত্রের জটিলতা এখনও রয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে বলে জানা গেছে।

দেশে ফিরে প্রবাসীরা সৌদি আরবে বাংলাদেশের দূতাবাসের কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, শুরু থেকে দূতাবাস সেভাবে যোগাযোগ করেনি, যা করলে হয়তো তারা আরও আগেই মুক্তি পেতে পারতেন। প্রবাসীদের অভিযোগ, এই দীর্ঘ সময়ে দূতাবাসের কোনো কার্যকর সহায়তা তাদের দিকে আসেনি।

তারা জানান, স্থানীয় কিছু বাংলাদেশি, মানবাধিকার সংগঠন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত এই মুক্তির পথ সুগম হয়েছে। প্রবাসীদের মতে, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকতে হবে।

ঘটনাটি দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের আন্তর্জাতিক প্রভাব এবং প্রবাসীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবার সুযোগ তৈরি করেছে। সচেতন মহল মনে করছেন, সরকারের উচিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা এবং অধিকার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া।