নওগাঁর পোরশা উপজেলায় পুকুরের পানি সেচ নিয়ে স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যাতে গাঙ্গুরিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি আফজাল হোসেন (৫৫) নিহত হন। এই ঘটনা ২৭ মার্চ ঘটলেও পরবর্তী সময়ে আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুতে স্থানীয় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২৭ মার্চ বিকেলে পোরশার বড়গুন্দইল নওয়াপাড়া এলাকার মালতিপুর ও কাদিপুর জামে মসজিদের লিজ নেওয়া পুকুরের পানি সেচকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ও মারামারি শুরু হয়। মারামারিতে আফজাল হোসেন গুরুতর আহত হন। তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত আফজাল হোসেন গাঙ্গুরিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং তিনি বড়গুন্দইল নওয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে। তার মৃত্যুতে স্থানীয় এলাকায় শোকের মাতম শুরু হয়েছে এবং গ্রামবাসী এই ঘটনার জন্য দায়ীদের শাস্তির দাবি তুলেছেন।
পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের ছোট ভাই আলফাজ হোসেন ২৮ মার্চ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরো অজ্ঞাত ৮ থেকে ১০ জনকে আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ পরবর্তীতে এ ঘটনায় ইমামুল হাসান, বাবুল হোসেন এবং রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে। আটককৃতদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনার পর পোরশা থানার পুলিশ এবং সাপাহার থানার পুলিশ একযোগে ঘটনার তদন্ত ও অভিযানে নেমেছে। পুলিশ জানায়, এটি দুই থানার সীমানা এলাকায় ঘটেছে, তাই উভয় থানার কর্মকর্তারা একত্রিত হয়ে কাজ করছেন।
এ ঘটনায় গ্রামবাসী ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা গভীরভাবে শোকাহত। স্থানীয়রা দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, ঘটনাটি এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। পুলিশ আরো জানায়, বাকি আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হচ্ছে এবং বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।
এমন মারাত্মক সংঘর্ষের ঘটনা স্থানীয় এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। একইসাথে, এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও এরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার জন্য প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।