আফগান সীমান্ত সংলগ্ন পাকিস্তানের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে অন্তত ৩০ সন্দেহভাজন জঙ্গি নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালিত হয় এবং এখনো এলাকাটিতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে নিরাপত্তা বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছে। আফগান সীমান্তের কাছের উপজাতীয় অঞ্চলে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযান নিয়মিত পরিচালিত হচ্ছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে, আফগানিস্তানের মদদে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) জঙ্গিরা পাকিস্তানের ভেতরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে কাবুল বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গি আস্তানা ধ্বংস করেছে এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, জঙ্গিরা সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে হামলার পরিকল্পনা করছিল।
দেশটির নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের পর পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে।
সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ কড়া অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নিরাপত্তা রক্ষায় সেনাবাহিনী যে কোনো পদক্ষেপ নিতে স্বাধীন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে আফগান সরকার বলছে, পাকিস্তানের অভিযোগ ভিত্তিহীন। কাবুলের দাবি, পাকিস্তান নিজেই জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করে আঞ্চলিক রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তবে ইসলামাবাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং সীমান্ত সুরক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
অন্যদিকে, সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হতে পারে যদি দুই দেশ সন্ত্রাসবাদ দমনে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।