খাগড়াছড়িতে আমের মুকুলে ঋতুর পরিবর্তনের ছোঁয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
আরিফুল ইসলাম মহিন -খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:২২ পূর্বাহ্ন
খাগড়াছড়িতে আমের মুকুলে ঋতুর পরিবর্তনের ছোঁয়া

খাগড়াছড়ির পাহাড়ি বন ও বসতবাড়ির আম গাছে সবুজ পাতার ফাঁক গলে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল। বসন্তের আগমনী বার্তায় প্রকৃতি সেজেছে ভিন্ন সাজে। শীত বিদায়ের শুরুতেই মুকুল জানান দিচ্ছে নতুন ঋতুর আগমন। চাষিরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিচর্যায়, ভালো ফলনের আশায় তারা আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।  


এ অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন জাতের আম চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দেশের চাহিদার পাশাপাশি বিদেশেও এর চাহিদা বাড়ছে। মাঘ মাসের শুরুতেই বিভিন্ন বাগানে মুকুল আসতে শুরু করেছে, যা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি দেখা যাবে। চাষিরা বলছেন, আমের গন্ধে প্রকৃতি সুরভিত হয়ে উঠবে, তবে ভালো ফলন পেতে হলে পরিচর্যায় বিশেষ নজর দিতে হবে।  


সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, খাগড়াছড়ির বিভিন্ন বাগানে ইতোমধ্যে আমের মুকুল দেখা যাচ্ছে। গাছে গাছে ফুটতে শুরু করেছে সোনালি সম্ভাবনা। আম চাষি রূপময় চাকমা জানান, তার ১২০ শতাংশ জমির বাগানে রূপালী, বারি-৮, থ্রি টেস্ট, বারি-১১সহ বিভিন্ন জাতের আম রয়েছে। বাগানের গাছগুলো কলম করা হওয়ায় দ্রুত ফলন দেয়। তিনি আশা করছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও ভালো উৎপাদন হবে।  


শুধু বাণিজ্যিক বাগান নয়, বিভিন্ন বাসাবাড়ির আম গাছেও মুকুল দেখা যাচ্ছে। মৌসুমি অর্থকরী ফল হিসেবে আমের গুরুত্ব থাকলেও বর্তমানে এটি শিল্পজাত পণ্য হিসেবেও জায়গা করে নিয়েছে। দেশের প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশ আম উৎপাদনের জন্য উপযোগী হওয়ায় এ ফলের উৎপাদন ক্রমশ বাড়ছে।  


স্থানীয় আম চাষি থৈলাও মগ জানান, মুকুল আসার পর গাছের যত্ন নেওয়া জরুরি। পরিচর্যার পাশাপাশি বাগানের আগাছা পরিষ্কার ও কীটনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে, যাতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।  


অন্যদিকে, আবহাওয়ার প্রতিকূলতা নিয়ে শঙ্কিত অনেক চাষি। বিশেষ করে মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া মুকুলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলে তারা মনে করছেন। এতে আম গাছের পাতা ও মুকুলে রোগের আক্রমণ হতে পারে, যা ফলনকে প্রভাবিত করতে পারে।  


উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার রাব্বি হাসান জানান, আমের মুকুল ভালো রাখতে প্রাকৃতিক পরাগায়নের জন্য মৌমাছি পালন এবং বাগানের চারপাশে ফলজ গাছ রোপণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।  


খাগড়াছড়িতে আমের মুকুলের সুবাস ছড়াতে শুরু করেছে। চাষিরা আশাবাদী, পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও ভালো ফলন পাবেন, যা স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও সরবরাহ করা সম্ভব হবে।