পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় ক্রমবর্ধমান সহিংসতা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাহীনতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা সরব হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে শান্তি মিছিল, সমাবেশ ও থানায় গণঅভিযোগ কর্মসূচি পালন করেছে তারা। "সংঘাত নয়, শান্তি চাই" এই স্লোগান সামনে রেখে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
সোমবার বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলা এই কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে মিছিল বের করে পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পাবলিক মাঠে শান্তি সমাবেশ করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক আয়েশাতুন্নেসা বর্ষার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মুনতাসির তাসরিপ, মুহাম্মদ রুহুল আমীন, ফারহান, রুপাইসহ আরও অনেকে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে খুন, চাঁদাবাজি, দখলদারি ও সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন বেড়েই চলেছে, যা তাদের আতঙ্কিত করে তুলেছে। তারা দাবি করেন, প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়বে। তারা প্রশ্ন তোলেন, প্রতিনিয়ত অপরাধ সংঘটিত হলেও কেন প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।
সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা বাউফল থানায় গিয়ে ৬৯টি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তদন্ত ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দেন, যদি দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তাহলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
অভিযোগ দাখিলের পর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনাও হয়। তারা জানান, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই বাউফলে একের পর এক অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, যা সহ্য করা হবে না। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানানো হয়।
এ বিষয়ে বাউফল থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর মাহবুবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা ৬৯টি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন, যা খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, অপরাধ দমনে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বাউফলের সাধারণ মানুষও শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, শিক্ষার্থীরা এই প্রতিবাদ না করলে প্রশাসন হয়তো নির্বিকার থাকত। অপরাধের বিরুদ্ধে এমন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়ে তারা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এই কর্মসূচির পর স্থানীয় প্রশাসনের ওপর চাপ আরও বেড়েছে। শিক্ষার্থীরা যদি তাদের দাবির সুষ্ঠু সমাধান না পান, তাহলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কত দ্রুত শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।