সায়মা ওয়াজেদের ডব্লিউএইচও পদ থেকে সরাতে দুদকের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশেষ প্রতিনিধি - দুর্নীতি দমন কমিশন
প্রকাশিত: রবিবার ১৯শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৩:৪১ অপরাহ্ন
সায়মা ওয়াজেদের ডব্লিউএইচও পদ থেকে সরাতে দুদকের চিঠি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে থাকার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক।  


২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সায়মা ওয়াজেদ ডব্লিউএইচও’র আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিযুক্ত হন। তবে দুদক অভিযোগ করেছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে শেখ হাসিনা তার মেয়েকে এ পদে নিয়োগে প্রভাব খাটিয়েছেন। এর আগে, পূর্বাচল আবাসিক প্রকল্পে প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে দুদক শেখ হাসিনা এবং তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।  


দুদকের দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনা এবং সায়মা ওয়াজেদ ছাড়াও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ জন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের কূটনৈতিক জোন থেকে ৬টি প্লট বরাদ্দে আইন এবং নীতিমালা লঙ্ঘন করা হয়েছে। বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় রাজউক এবং গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের যোগসাজশের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।  


মামলার এজাহারে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে সায়মা ওয়াজেদ পূর্বাচলের ২৭ নম্বর সেক্টরের প্লট নিজের নামে বরাদ্দ নিয়েছেন। এটি আবাসিক প্রকল্পের নিয়ম এবং শর্তাবলী লঙ্ঘন করে করা হয়েছে। বরাদ্দের প্রক্রিয়ায় অন্য কর্মকর্তারা প্রতারণামূলক উপায়ে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ।  


এদিকে, সায়মা ওয়াজেদকে ডব্লিউএইচও’র পদ থেকে অপসারণের দাবিতে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম চেঞ্জ ডট ওআরজি-তে একটি পিটিশন চালু হয়েছে। ‘অ্যাক্ট নাও বাংলাদেশ’ নামক একটি মানবাধিকার সংগঠন এ পিটিশনের আয়োজন করেছে। তারা সায়মার ডব্লিউএইচও’র পদে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিশ্ব স্বাস্থ্য নেতৃত্বে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।  


পিটিশনের লিংক শেয়ার করে আয়োজকরা দাবি করেছেন, সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত তার ডব্লিউএইচও’র পদে থাকা অনুচিত। তারা আরও বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা বজায় রাখতে এটি প্রয়োজন।  


দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, সায়মা ওয়াজেদের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত অনিয়মের তদন্তে আরও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় এ ধরনের বরাদ্দ গ্রহণ সুশাসনের পরিপন্থী।  


ডব্লিউএইচও এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব সবসময় ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হলেও এ ধরনের বিতর্ক দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে। সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের দ্রুত সমাধান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দেশ এবং সরকারের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।