মেহেরপুর হানাদার মুক্ত দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
এস এম তারেক হোসেন, জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর
প্রকাশিত: শুক্রবার ৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:০৭ অপরাহ্ন
মেহেরপুর হানাদার মুক্ত দিবস আজ

আজ শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ঐতিহাসিক মেহেরপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মেহেরপুর জেলা পাক হানাদার বাহিনীর দখলমুক্ত হয়, যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়।  


১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর থেকে গোপনে পাক হানাদার বাহিনী মেহেরপুর ত্যাগ করতে শুরু করে। ৬ ডিসেম্বর সকালে মেহেরপুর পুরোপুরি মুক্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসী গেরিলা আক্রমণে পিছু হটে তারা। ওই দিনই মেহেরপুরের সর্বস্তরের মানুষ আনন্দ-উল্লাসে রাস্তায় নেমে আসে এবং লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে বিজয়ের আনন্দে মেতে ওঠে।  


মেহেরপুর মুক্ত হওয়ার পথে একাধিক ঘটনা ইতিহাসে অমর হয়ে রয়েছে। ২ ডিসেম্বর গাংনী উপজেলা মুক্ত হওয়ার পর মুক্তিবাহিনীর নেতৃত্বে ক্যাপ্টেন তৌফিক ইলাহী চৌধুরী হাটবোয়ালিয়ায় ঘাঁটি স্থাপন করেন। মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী একত্রে কাজ করে ৫ ডিসেম্বর মেহেরপুর শহরে প্রবেশ করে। সীমান্তে স্থাপন করা মাইন অপসারণের মাধ্যমে নিশ্চিত হয় মেহেরপুরের পূর্ণ মুক্তি।  


যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ পাতান স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জানান, মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই মেহেরপুর হানাদার বাহিনীর অন্যতম লক্ষ্যস্থল ছিল। বিশেষ করে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণের পর থেকে এই অঞ্চল হয়ে ওঠে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ সংগ্রামের কেন্দ্র।  


তিনি আরও জানান, পাক সেনারা মেহেরপুর ছাড়ার সময় দিনদত্ত ব্রিজসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করে। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের অবিরাম লড়াইয়ের ফলে তারা পরাজিত হয়। সেইদিন শহরে লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার বিজয় ঘোষণা করা হয়।  


বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল আলম সোনা জানান, মেহেরপুরের বিভিন্ন এলাকায় গণহত্যা চালিয়েছিল পাক সেনারা। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের অব্যাহত প্রতিরোধ তাদের পালাতে বাধ্য করে।  


মেহেরপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে আজ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর কলেজ মোড় থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি পর্যন্ত র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯টায় শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।  


মেহেরপুর মুক্ত দিবসের তাৎপর্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান আজও প্রেরণা জোগায় নতুন প্রজন্মকে।