দহগ্রাম সীমান্তে ফের উত্তেজনা, বিএসএফের বেড়া স্থাপনের চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি , লালমনিরহাট
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৩০শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৪:২৩ অপরাহ্ন
দহগ্রাম সীমান্তে ফের উত্তেজনা, বিএসএফের বেড়া স্থাপনের চেষ্টা

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম সীমান্তের শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়া স্থাপনের তৎপরতা চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে বিএসএফের উপস্থিতিতে ভারতীয় নাগরিকদের বেড়া স্থাপনের কাজ করতে দেখা গেছে। বিজিবি এই কার্যক্রমের বিরোধিতা করলেও বিএসএফ সদস্যরা তা উপেক্ষা করে এবং তর্কে জড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিজিবির এক সদস্য দুই দেশের পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শূন্যরেখায় বেড়া নির্মাণ বন্ধ রাখার কথা বললেও বিএসএফ সদস্যরা জানায়, তারা কাজ চালিয়ে যাবে এবং বিজিবি যা খুশি করতে পারে।  

গত ১০ জানুয়ারি দহগ্রাম সীমান্তে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চার ফুট উচ্চতার কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা চালায় ভারত। বিজিবির বাধায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং দুই দেশের ডিআইজি পর্যায়ের বৈঠকের পর আপাতত কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তবে কিছুদিনের মধ্যেই বিএসএফ সেই বেড়ায় অসংখ্য কাঁচের বোতল ঝুলিয়ে দেয়, যা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়ায়। এবার আবারও বেড়া নির্মাণে সক্রিয় হতে দেখা গেছে বিএসএফকে।  

বিজিবির পানবাড়ি ক্যাম্পের সুবেদার মো. জামিল জানান, কয়েকদিন আগেই বিএসএফ বেড়া নির্মাণের চেষ্টা চালায়, তবে বিজিবির বাধার মুখে তারা কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সীমান্ত এলাকায় বেড়া নির্মাণ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আগেও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে এবং এটি চুক্তির পরিপন্থী।  

স্থানীয় বাসিন্দারা এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, ভারতীয়দের বেড়া স্থাপনের এই প্রচেষ্টা সীমান্ত এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত করতে পারে। অনেকে আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের তৎপরতা নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।  

বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শূন্যরেখায় বেড়া নির্মাণের কোনো অনুমতি নেই এবং এটি আন্তর্জাতিক নিয়মের লঙ্ঘন। সীমান্তের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে কূটনৈতিক পর্যায়েও আলোচনা জরুরি। সীমান্তে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে উভয় দেশের পক্ষ থেকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত বলে মনে করছেন তারা।