ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বহরমপুর গ্রাম। ইতিমধ্যে এখানে কয়েক শত বসতবাড়ি, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ এবং বহু বিঘা ফসলী জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। নদীর তীরবর্তী এই এলাকার হাজার হাজার মানুষ এখন নিঃস্ব, বাপ-দাদার ভিটে ও কবরের চিহ্ন হারিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছরে এই ভাঙন পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। গত বছরের অক্টোবর মাসে জয়নাল আবেদীন মৃধার বাড়ি নদীতে চলে যাওয়ার পর কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তা কার্যকর হয়নি। রহমান মৃধা বলেন, "আমার বাপ-দাদার কবরের চিহ্নও নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। আমাদের থাকা-খাওয়ার জায়গা সব নদীর ভেতরে।"
ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকা আরেক বাসিন্দা মতলেব লস্কর জানান, "বৃদ্ধ মায়ের শেষ ইচ্ছার কারণে আমরা এখনও এখানে রয়েছি, কিন্তু যেকোনো মুহূর্তে আমাদের শেষ আশ্রয়টিও নদীতে চলে যেতে পারে।" তিনি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
বহরমপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মাসুম লস্কর শাহাজাদা বলেন, "বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই বিষয়টি উল্লেখিত হলেও সরকারিভাবে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আমাদের সব কিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে।" তিনি জয়নাল মৃধার বাড়ি, লস্কর বাড়ি এবং স্থানীয় মসজিদ রক্ষার জন্য সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানান।
নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, "ভাঙন রোধে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী সাজেদুল বারি বলেন, "এই এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে এবং টেকসই প্রকল্পের কাজ শিগগিরই শুরু হবে।"
স্থানীয়দের প্রত্যাশা, দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে তাদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করা সম্ভব হবে। নদী ভাঙন রোধে সরকারের কার্যকর উদ্যোগের অপেক্ষায় রয়েছে বহরমপুরের বাসিন্দারা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।