সিলেটে মোবাইল ফোনের চোরাচালান: সীমান্তে চলছে গোপন কারবার

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি, সিলেট
প্রকাশিত: শনিবার ১৯শে অক্টোবর ২০২৪ ০৪:৪২ অপরাহ্ন
সিলেটে মোবাইল ফোনের চোরাচালান: সীমান্তে চলছে গোপন কারবার

রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর সিলেট সীমান্তে আবারও বেড়েছে চোরাই মোবাইল ফোনের প্রবাহ। সম্প্রতি ভারতের বাজার থেকে চুরি হওয়া দামী মোবাইল ফোনের চালানগুলো সিলেটের সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং সিলেটসহ ঢাকা ও অন্যান্য শহরের মার্কেটে সস্তায় বিক্রি হচ্ছে। এই চোরাচালানের ফলে সাধারণ মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন, কারণ বাজারে বিক্রি হওয়া এসব মোবাইল ফোনের বৈধতা সম্পর্কে সন্দেহ সৃষ্টি হচ্ছে।


বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে চোরাচালানকারী চক্রগুলো আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কিছুদিন আগে গোয়াইনঘাট সীমান্ত থেকে ৩০ লাখ টাকার একটি মোবাইল ফোনের চালান উদ্ধার হয়। ওই সময়ে ছাত্রলীগের কিছু নেতা সীমান্ত এলাকায় কার্যকলাপ পরিচালনা করছিলেন। এখন এই চক্রের সদস্যরা গা ঢাকা দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।


সিলেটের করিম উল্লাহ মার্কেটে এসব চোরাই মোবাইল ফোনের বিপুল সংগ্রহ দেখতে পাওয়া যায়, যেখানে দামি ল্যাপটপও চোরাই পথে বিক্রি হচ্ছে। অনেক ক্রেতা বিষয়টি বুঝতে পারছেন না, ফলে তারা বৈধ এবং অবৈধ পণ্যের মধ্যে পার্থক্য করতে পারছেন না। 


এদিকে, মোবাইল ফোন চোরের সদস্যরা সাধারণ মানুষের অনুসরণ করে তাদের ফোন ছিনতাই করছে। বিশেষ করে সিএনজি অটোরিকশার যাত্রীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের টার্গেট হচ্ছে। আশ্চর্যজনকভাবে, এই চক্রে নারীদেরও দেখা যাচ্ছে, যারা সাধারণ পোশাকে বা বোরকা পরে বাসাবাড়িতে ঢুকে ফোন চুরি করছে। এই ধরনের ঘটনার কারণে সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।


অনেক সময় আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে এবং মোবাইলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আলাদা করে বিক্রি করে চোরাচালানকারী চক্রগুলো তাদের পরিচয় লুকিয়ে রাখতে সক্ষম হচ্ছে। যদিও পুলিশ এই চক্রকে ধরা দিতে কাজ করছে, তাদের কার্যক্রম বন্ধ করার কোনো কার্যকর উপায় এখনও বের হয়নি।


সীমান্তের বিছানাকান্দি এলাকা দিয়ে নিয়মিতভাবে চোরাই মোবাইল ফোন বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। সরকারের পরিবর্তনের পর এই ব্যবসায়ী চক্রটি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে মোবাইল নিয়ে আসছে, কিন্তু বর্তমান প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না। 


স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, ক্ষমতার পরিবর্তনের পরও চোরাচালানকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে সিলেটে চোরাচালানের এই গোপন কারবার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।