ঈদের ছুটিতে দেবীদ্বারে ৪ হত্যাকান্ড: আটক-১

নিজস্ব প্রতিবেদক
শফিউল আলম রাজীব, জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: সোমবার ১৫ই এপ্রিল ২০২৪ ১১:১৪ অপরাহ্ন
ঈদের ছুটিতে দেবীদ্বারে ৪ হত্যাকান্ড: আটক-১

কুমিল্লার দেবীদ্বারে ঈদের ছুটিতে (গত ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল) আবু সায়েম(৩৯) নামে এক ব্যবসায়িকে অপহরণপূর্বক নির্যাতনে হত্যা, সালিসবিচারে সালিসদার চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে শামিম(৫০) নামে এক চা দোকানদারকে হত্যা, হাসপাতালে ঢুকে অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারী অক্সিজেনের সিলিন্ডার দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে শাহনাজ মিম (৪৫) নামে এক আয়াকে হত্যা এবং দির্ঘ ২২ বছর নিখেঁজ থাকার পর পিতার সম্পদ থেকে বঞ্চিত আবুল হাসেম(৫০) নামে এক ব্যক্তির নাকে-মুখে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পরে থাকা অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারসহ ৪টি খুনের ঘটনা ঘটেছে।


এসব হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৯ নং গুনাইঘর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা খোরশেদ আলমকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মা-মনি হাসপাতালের আয়া শাহনাজ মিম হত্যাকান্ডের ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালকসহস ৪ কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তাছাড়া এসকল অভিযোগের আর কোন অগ্রগতি নেই।


এ ঘটনাগুলো গত ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিলে এই পাঁচ দিনে চারটি হত্যাকান্ডের ঘটনায় পুরো উপজেলা জুড়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, গত ৮ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টায় দিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকা থেকে পাওনা টাকা আদায়ের লক্ষে একদল সন্ত্রাসী দিয়ে আবু সায়েম (৩৯) নামের এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে দেবীদ্বার উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ও তার ছেলে আবদুল্লাহ আলমামুন। অপহরনের পর রাত পোনে ২টায় দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিলে আবুসায়েমের লাশ। এ ঘটনায় ওই সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমকে রাতেই গ্রেফতার করে পুলিশ। নিহত সায়েম উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের চাষারপাড় গ্রামের আবদুর রহিম সরকারের ছেলে এবং দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিদ্দিকুর রহমান ভূইয়ার মেয়ের জামাতা।


১২ এপ্রিল (শুক্রবার) দিবাগত রাত ৯টায় উপজেলার গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের উজানীকান্দি গ্রামে একটি পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে সালিস ডাকা হয়। সালিসে উভয় পক্ষের স্বাক্ষ্য গ্রহনের এক পর্যায়ে পার্শ্ববর্তী উজানী জোড়া খন্দকার বাড়ির মোসলেম খন্দকারের ছেলে আব্দুল আলিম খন্দকার(৪০) প্লাষ্টিক ও কাঠের চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে শামীম (৫০) নামের এক চা দোকানদারকে মারাত্মক আহত করে। তাকে উদ্ধার করে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর আশংকাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করলে ১৩ এপ্রিল (শনিবার) বিকেল পৌনে ৪টায় টায় তার মৃত্যু হয়। নিহত শামিম উজানীকান্দি গ্রামের মৃতঃ আব্দুল খালেকের পুত্র, সে বাড়ির পাশে চা’ দোকানের ব্যবসা করে আসছিল।


একই দিন (১২ এপ্রিল) দিবাগত রাত অনুমান ৩টায় কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবীদ্বার সদর এলাকার জেলা পরিষদ মার্কেট সংলগ্ন ‘মা-মনি’ প্রাইভেট হাসপাতালে ঢুকে অক্সিজেন সিলিন্ডিার দিয়ে পিটিয়ে শাহনাজ বেগম মিম (৪৫) নামে এক আয়াকে ঘুমন্ত অবস্থায় মারাত্বকভাবে রক্তাক্ত ও আহত করে অজ্ঞাত দূর্বৃত্তরা। ঘটনার পর আহত মিমকে মাথা ও মুখমন্ডল থেতলানো ও রক্তাক্ত অবস্থায় দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়, পরে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর বেলা ২টায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত শাহনাজ মিম (৪৫) দেবীদ্বার পৌর এলাকার ভূষণা গ্রামের মৃত: সেকান্দর আলীর মেয়ে।


অপরদিকে ১৩ এপ্রিল (শনিবার) দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টায় উপজেলার বাগুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বস্তি থেকে আবুল হাসেম (৫০) নামের এক দোকান শ্রমিকের গলিত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। নিহত আবুল হাসেম বাগুর ছৈনুদ্দি হাজী বাড়ির মৃত: আব্দুল মজিদের পুত্র। তিনি চান্দিনা বাজারে একটি চায়ের দোকানে কাজ করতেন।


এ বিষয়ে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নয়ন মিয়া জানান, দেবীদ্বারে ৪ টি মরদেহ উদ্ধার হলেও একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, অপর ৩ হত্যাকান্ডের ঘটনায় আবু সায়েম হত্যা মামলায় ৪ জন নামে এবং ৭/৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়, এ মামলায় খোরশেদ আলম নামে ১ জনকে গ্রেফতার করে কোর্ট হাজতে চালান 

শফিউল আ