পূর্বধলায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই বীর মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফন, তোপের মুখে ইউএনও

নিজস্ব প্রতিবেদক
এ কে এম আব্দুল্লাহ, জেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোনা
প্রকাশিত: শুক্রবার ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৫১ অপরাহ্ন
পূর্বধলায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই বীর মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফন, তোপের মুখে ইউএনও

নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় এক বীর মুক্তিযোদ্ধার জানাযায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সময় মতো উপস্থিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ লোকজন রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফন সম্পন্ন করেছেন।


     মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় লোকজন জানায়, পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের মহিষবেড় গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম (৭৮) গত বৃহস্পতিবার বিকালে নিজ বাড়ি মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন যাবত মরণব্যাধি ক্যান্সারে ভুগছিলেন।


     বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পূর্বধলা উপজেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নিজাম উদ্দিন জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হয়। পরে নিহতের পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ১০টায় জানাযা শেষে লাশ দাফনের সময় নির্ধারণ করা হয়।  বৃহস্পতিবার রাতে আবারও ইউএনওর সাথে কথা হয়। তিনি সকাল ১০টায় উপস্থিত থাকার আশ^াস দেন।  


সে অনুযায়ী আমরা মরদেহ নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকি ও বারবার ফোন দিতে থাকি কিন্তু ইউএনও ফোন রিসিফ করেননি। সকাল ৯টার দিকে পুলিশের টিম এসে পৌঁছে। কিন্তু ইউএনও আর আসেন না। আমরা নির্ধারিত সময়ের পর প্রায় আধা ঘন্টা পর্যন্ত তার জন্য অপেক্ষা করলেও উপজেলা প্রশাসনের যখন কেউ আসেননি, তখন আমরা স্থানীয় মুসল্লীরা মুরব্বিদের পরামর্শে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই জানাযা শেষে লাশ দাফন করে ফেলি। লাশ দাফনের পর ইউএনও শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান। তখন স্বাভাবিক ভাবেই সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধা ও উপস্থিত লোকজন ইউএনও’র উপর ক্ষুব্ধ হয়। তাদের তোপের মুখে পড়েন  ইউএনও। পরে দেরিতে আসার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।


        সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ নিজাম উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, এর আগেও নারায়নডহর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলামসহ আরও দুইজন মুক্তিযোদ্ধাদের জানাযায়ও সময়মতো যেতে পারেননি ইউএনও। তাছাড়া তাকে ফোনে না পাওয়ার বিষয়াটও নতুন না।


       এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি বেশ কিছুদিন যাবত শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ।  শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে জাগতে একটু দেরী হয়েছে।  তাছাড়া গাড়ীটাও নষ্ট ছিল। এর পরও এসি-ল্যান্ড এর গাড়ী নিয়ে গিয়েছি। তবে একটু বিলম্বে। আমি সময়মতো পৌঁছতে না পারায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।  আশা করি, আপনারা সাংবাদিকরাও বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।