চরমোনাইয়ে তিনদিন ব্যাপী বার্ষিক মাহফিল শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: বুধবার ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:২৮ অপরাহ্ন
চরমোনাইয়ে তিনদিন ব্যাপী বার্ষিক মাহফিল শুরু

উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে চরমোনাইর তিনদিন ব্যাপী বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী বয়ানে চরমোনাই পীর আমীরুল মুজাহিদীন আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, চরমোনাই মাহফিল দুনিয়াবি উদ্দেশ্যে নয় বরং পথভোলা মানুষকে আল্লাহর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যই এই মাহফিল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সুতরাং এখানে দুনিয়াবি কোনো উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আসার প্রয়োজন নেই। যদি এমন কেউ এসে থাকেন তবে নিয়ত পরিবর্তন করে আত্মশুদ্ধির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।


বুধবার বাদ জোহর চরমোনাই মাদরাসার মূল মাঠসহ মোট ৬টি মাঠ নিয়ে অনুষ্ঠিত চরমোনাইর বার্ষিক মাহফিলের উদ্বোধনী অধিবেশনে পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, যারা চরমোনাইতে নতুন এসেছেন, তারা দুনিয়ার ধ্যান-খেয়াল বিদায় করে দিয়ে আখেরাতের খেয়াল-ধ্যান অন্তরে যায়গা দেন। দিল থেকে বড়ত্ব এবং আমিত্ব ভাব বের করে দিয়ে আল্লাহর কুদরতি পায়ে নিজেকে বিলীন করে দিতে হবে। সদা-সর্বদা আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে দিলকে তরতাজা রেখে আল্লাহর ওলী হয়ে চরমোনাই থেকে বিদায় নেয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। পীর সাহেব চরমোনাই তাঁর উদ্বোধনী বয়ান শেষে মাহফিলের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা করেন। এবছর মাহফিলে ভারতের দেওবন্দ, সৌদিআরব ও পাকিস্তানের বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান পেশ করবেন। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে কওমি মাদরাসার সম্মিলিত শিক্ষা বোর্ড আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতুল কওমিয়া বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান ও বেফাকের সভাপতি আল্লামা মাহমুদুল হাসান শায়খে যাত্রাবাড়ি চরমোনাই মাদরাসায় উপস্থিত হয়ে মাহফিলের সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর নেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করেন।


মাহফিলে আগত মুসল্লীদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ১০০ শয্যা বিশিষ্ট অস্থায়ী মাহফিল হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। এতে ১১ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অধীনে আরো ৪০ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে চিকিৎসা সেবা পরিচালিত হচ্ছে। ৬ টি এ্যাম্বুল্যান্স ও ১ টি স্পীড বোর্ড মাহফিল হাসপাতালে কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে। মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীকে মাহফিল হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য নিযুক্ত রয়েছে বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। ছয়টি মাঠে মাহফিলের শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিযুক্ত করা হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী। সারাদেশ থেকে আগত মুসল্লীদের খাবারের জন্য প্রত্যেকটি মাঠের চারিদিকে সুপেয় নিরাপদ পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিন দিনব্যাপী বিশাল এ মাহফিলে দ্বিতীয় দিন সারাদেশ থেকে আগত ওলামায়ে কিরামদের নিয়ে ওলামা সম্মেলন ও শেষদিন সকালে সারাদেশ থেকে আগত ছাত্র-জনতাকে নিয়ে ছাত্র গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারী শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় হযরত পীর সাহেব চরমোনাই’র আখেরি বয়ানের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী বিশাল এ মাহফিলের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।