রানীনগরে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার মামলার ১৫ দিনেও আটক হয়নি আসামী

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১লা ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:১৬ অপরাহ্ন
রানীনগরে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার মামলার ১৫ দিনেও আটক হয়নি আসামী

নওগাঁর রানীনগরে খাওয়ার জিনিস দেওয়ার প্রলোভনে তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে শফির মোল্লা (৫৫) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলা ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ আসামীকে গ্রেফতার করছেন না। মামলার পর থেকে ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর পরিবার। বর্তমানে নিরাপত্তার হীনতায় ভুগছে পরিবারটি। 


আসামীকে দ্রুত গ্রেফতার এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। এনিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন নওগাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে। অভিযুক্ত শফির মোল্লা উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের জালালাবাদ গ্রামের মৃত অতি মোল্লার ছেলে।


মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৬ নভেম্বর দুপুরে শিশুটি বাড়ির পাশে খেলা করছিল। এসময় প্রতিবেশী শফির মোল্লা শিশুটি খাওয়ার জিনিস দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে বাড়ির ভেতরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। শিশুটির চিৎকার শুনে তার মা অভিযুক্তের বাড়িতে প্রবেশ করলে জোরপূর্বক গালিগালাজ করে বের করে দেয়। বাড়ি গিয়ে শিশুটি যন্ত্রনায় কান্না করলে তার মাকে বিষয়টি খুলে বলে। পরে শিশুটিকে রানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করে। পরে ১০ নভেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।


সংবাদ সম্মেলনে মামলার বাদী ও শিশুর বাবা অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার পর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তবে মামলা নিতে পুলিশ নানা তালবাহনা শুরু করে। বাধ্য হয়ে ন্যায় বিচার পেতে শফির মোল্লাকে আসামী করে গত ১৪ নভেম্বর আদালতে মামলা করা হয়। আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলার পর ভুক্তভোগী আমার ছোট্ট শিশু কন্যাকে তারা মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমরা গরীব ও অসহায় পরিবার। বর্তমানে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। স্বাক্ষীদেরও তারা মারপিট করেছে। দ্রুত আসামীকে গ্রেফতার করা সহ পরিবারের নিরাপত্তার দাবী জানাই।


ভুক্তভোগীর মা মুক্তা বানু বলেন, প্রথমে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ কোন ধরণের পদক্ষেপ নেয়নি। পরে আদালতে গিয়ে মামলা করা হয়। মামলার পর থেকে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। আসামী এলাকায় ঘুরলেও পুলিশ তাকে আটক করেনি। মামলা তুলে নিতে আসামীর স্ত্রী ফরিদা, ছেলে ফরিদুল ও আকাশ বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।


এ ব্যাপারে আসামীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোন মন্তব্য করতে চাননি।


রানীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, আসামী গ্রেফতারে এলাকায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আসামী পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আসামী যে এলাকায় ঘুরছে এবং তাকে গ্রেফতার করছি না এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন।


রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্মা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, থানায় মামলা নেওয়া হয়নি এটা ভুল কথা। আসামীকে এলাকায় না পাওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি। আসামী আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে।