বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ দুদকের অভিযান, বন্দর কর্মকর্তাকে ঢাকায় বদলি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ৪ঠা জুলাই ২০২২ ০৬:০০ অপরাহ্ন
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ দুদকের অভিযান, বন্দর কর্মকর্তাকে ঢাকায় বদলি

বরিশাল নদীবন্দরে প্রবেশের জন্য টোলের বিক্রি করা টিকিট সংরক্ষণ করে পুনরায় বিক্রি করার ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশালের তিন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানকে ঢাকার সদরঘাটে বদলি করা হয়। গত ২৮ জুন বরিশাল দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা নদীবন্দরে অভিযান চালিয়ে ওই অনিয়মের সত্যতা পাওয়ার পর রাষ্ট্রীয় নৌপরিবহন সংস্থাটি এ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) কাজী ওয়াকিল নেওয়াজ। বরখাস্ত হওয়া তিন কর্মচারী হলেন, বরিশাল নদীবন্দরের শুল্ক আদায়কারী ফারুক সরদার, মাসুদ হোসেন খান ও মনির হোসেন। 


কাজী ওয়াকিল নেওয়াজ জানান, ২ জুলাই এক অফিস আদেশে উপরোক্ত ৪ জনের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ওই আদেশে বলা হয়, দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসদাচরণ ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠায় তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।


এবিষয়ে জানতে চাইলে বরিশালে নৌ বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২৮ জুন বরিশাল নদীবন্দরে অভিযান চালায় দুদক। তারা বরিশার নদী বন্দরের ১,২,৩ নং কাউন্টারে অভিযান পরিচালনা করেন। জনৈক ব্যাক্তির অভিযোগের পেক্ষিতে দুদক অভিযান চালিয়ে বিক্রিত টিকিট পুনরায় বিক্রি ও কিছু টিকিট পায়। বিষয়টি নিয়ে দুদক তদন্ত করে। এঘটনায় টিকিট কাউন্টারের তিন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত সহ আমাকে ঢাকায় বদলি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ঘটনার দিন আমি ঢাকায় একটি মিটিংয়ে ছিলাম। ওই অভিযানের জের ধরেই বিআইডব্লিউটি এর ভাবমূর্তির বিষয়টি সমুন্নত রাখতে আমাকেও ঢাকায় বদলি করা হয়।


এর আগে ২৮ জুন বরিশাল নদীবন্দরে অভিযান চালায় দুদকের একটি দল। অভিযানে নদী বন্দরের ২ নম্বর কাউন্টারে বিক্রি করা ৮৬৩টি টিকিট কাউন্টারের ড্রয়ার ও ঝুলিয়ে রাখা ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয়।


অভিযোগ রয়েছে, ওইসব টিকিট যাত্রীদের কাছে ফের বিক্রি করার জন্য রাখা হয়েছিল। অপরদিকে এক নম্বর কাউন্টারে বিক্রি হওয়া টিকেটের অনুকলে অতিরিক্ত অর্থ পাওয়া যায়। একই টিকিট একাধিকবার বিক্রি করায় বাড়তি টাকা আদায় করা হয়েছে বলে দুদক কর্মকর্তারা ধারণা করছেন।


সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি কোনো এক ব্যক্তি বরিশাল নদীবন্দরে প্রবেশের জন্য সরকার নিধারিত টোলের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়  এবং বিক্রিত টিকিট সংগ্রহ করে পুনরায় বিক্রি করার অভিযোগ দেয় দুদকে। ওই অভিযোগ পাওয়ার পর দুদকের একটি দল বরিশাল নৌ-বন্দরে অভিযান চালায়। 


দুদকের বরিশাল কার্যালয়ের উপপরিচালক দেবব্রত মন্ডল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বরিশাল নদীবন্দরের কাউন্টারে অভিযান চালান তারা। এ সময় সেখান থেকে অবৈধ টিকিট ও টিকিট বিক্রির হিসাবের খাতা জব্দ করেন। তিনি আরও বলেন, অনেকদিন ধরেই বরিশাল নদীবন্দরে টিকেট কাউন্টারে টিকেট কালোবাজারির তথ্য ছিল আমাদের কাছে। বিষয়টি আমরা নজরদারিতে রেখেছিলাম। এ ঘটনায় আরো অনুসন্ধান চলছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।