ভূঞাপুরে তালের আঁটি বিক্রির ধুম

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফুয়াদ হাসান রঞ্জু, উপজেলা প্রতিনিধি, ভূঞাপুর- টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: বুধবার ১লা জুন ২০২২ ০৪:৫৬ অপরাহ্ন
ভূঞাপুরে তালের আঁটি বিক্রির ধুম

চলছে মধুমাস। আর এই মধুমাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হরেক রকমের ভিন্ন স্বাদের সুস্বাদু ফল। চলতি সময়ে ফলের তালিকায় রয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু সহ এসময়ের জনপ্রিয় রসালো ফল তালের শাঁস (তালের আঁটি)। নরম অংশটি সকল বয়সের লোকের কাছে খুবই সুস্বাদু। গ্রামাঞ্চলে এটি ‘তালকুশ’ বা ‘তালের আঁটি’ নামে পরিচিত। প্রচন্ড গরমে তালের এই শাঁসটি গ্রাম ও শহরের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়। তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে তালের শাঁস অনেক উপকারী। এর রয়েছে অনেক গুণাগুণ।


তালের শাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। প্রচন্ড গরমে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ মানব দেহের পানি শূন্যতা দুর করে। এছাড়া এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, এ, বি কমপ্লেক্সসহ নানা ধরনের ভিটামিন। তালে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দুর করে। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।



সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌর শহর ও উপজেলার বিভিন্ন অলিতে-গলিতে, হাট-বাজারে, রাস্তার মোড়ে মোড়ে এবং এলাকায় ঘুরে ঘুরে তালের আঁটি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তালের আঁটি বা তালকুশ কিনতে সবচেয়ে বেশি ভীড় দেখা যায় স্কুল কলেজের আশেপাশের তাল বিক্রেতাদের দোকানগুলোতে। বর্তমানে এর চাহিদা অনেক বেড়েছে গেছে। বিক্রেতা শাঁস কেটে সারতে পারছে না, ক্রেতারা দাঁড়িয়ে রয়েছে শাঁস নিতে। প্রতিটি আঁশ বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১০ টাকায়। প্রতি বছর এসময় তালের শাঁস বিক্রি করে অনেক হতদরিদ্র মানুষ জীবিকা করে থাকেন।


তালের আঁটি কিনতে আসা আব্দুল  বলেন, আমি প্রতিদিন ২ থেকে ৩টি করে তালের আঁটি খাই। এটি খেতে খুব সুস্বাদু। দামেও অনেক কম। আমি নিজেও খাই ও পরিবারের সদস্যদের জন্য নিয়ে যাই।


খালেদা বেগম বলেন, আমি আমার সন্তানদের জন্য তালের আঁটি কিনতে এসেছি। এটি খেতে সুস্বাদু ও মজাদার হওয়ায় ছেলে মেয়েরা প্রতিদিনি তালের আঁটি খায়।  


তালের শাঁস বিক্রেতা মো. মানিক মিয়া , সিরাজুল সহ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, আমরা প্রতিবছর এই সময়টাতে তালের আঁটি বিক্রি করে সংসার চালাই। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে তাল কিনে গাছ থেকে পেরে এনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আঁটি বিক্রি করি। ছোট আঁটি ৫ টাকা, বড় আঁটি ৮ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি করি। সারাদিন বিক্রি করলে ৭ থেতে ৮শ টাকা লাভ হয়।


এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, বজ্রপাত প্রতিরোধে উপজেলার বিভিন্ন সড়কের পাশ দিয়ে তালের বীজ  রোপণ করা হয়েছে। কচি তালের আঁটিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, নানা ধরনের ভিটামিন, এন্টি অক্সিডেন্ট। কচি তালের আঁটি রক্তশূন্যতা দূর করে। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে। এই গরমে কচি তালের আঁটি মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী।