রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে গণপিটুনির মাধ্যমে হত্যা মামলায় আদালত এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছে। আজ (৯ অক্টোবর) অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম এই রায় প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৮ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলাটির রায় ৩০ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হলে, সেদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় নতুন তারিখ ধার্য করা হয়। উল্লেখযোগ্য যে, ২০১৯ সালের ২০ জুলাই তাসলিমা বেগম রেনু রাজধানীর বাড্ডার একটি স্কুলে সন্তানদের ভর্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হন। এ ঘটনায় রেনুর ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু অজ্ঞাত ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল হক ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন, পাশাপাশি অপ্রাপ্তবয়স্ক দুইজনের বিরুদ্ধে দোষীপত্রও জমা দেন। আদালত ২০২১ সালের ১ এপ্রিল ১৩ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন।
মামলায় ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানির সুযোগ দেওয়া হয় এবং শেষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।
এই রায় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক আলোচনা হচ্ছে, বিশেষ করে গণপিটুনির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন।
এদিকে, রায় ঘোষণার পর মামলাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পেয়েছে। আদালতের এই রায় বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থার প্রতিফলন বলে মনে করছেন অনেকেই।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।