চট্টগ্রামে লোহাগাড়া থানা এলাকায় আসামি ধরতে গিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন হওয়া পুলিশ সদস্য মো. জনি খানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। রবিবার (১৫ মে) বিকাল ৩টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম থেকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ঘটনায় আহত অপর পুলিশ সদস্য শাহাদাত হোসেনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
নগরের পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান জানান, লোহাগাড়া থানার কনস্টেবল জনি খান রবিবার সকালে লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের লালাখিল গ্রামে পরোয়ানাভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করতে যায়। এ সময় আসামি তার বাম হাতে দা দিয়ে কোপ দিয়ে পালায়। এতে তার বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এনে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তার শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকাল ৩টার দিকে চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তে হেলিকপ্টারে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
লোহাগাড়া থানার ডিউটি অফিসার এসআই নাছিমা আকতার জানান, সকালে লোহাগাড়া থানার এসআই ভক্ত চন্দ্র দত্তের নেতৃত্বে পদুয়া ইউনিয়নের লালাখিল গ্রামে অভিযানে যান পুলিশ সদস্যরা। সেখানে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে জনি ও শাহাদাত নামে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আসামি ও তার লোকজনের অস্ত্রের আঘাতে কনস্টেবল জনির বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
এসআই ভক্ত চন্দ্র দত্ত বলেন, ‘কনস্টেবল জনিকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। আমিও তাদের সঙ্গে ঢাকায় এসেছি। বর্তমানে আল মানার নামে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তার অপারেশন চলছে।’
লোহাগাড়ার পদুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ জানান, সকালে ইউনিয়নের লালাখিল গ্রামে পুলিশের একটি দল কবির আহমেদ নামে পরোয়ানাভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করতে যায়। তার বিরুদ্ধে মারামারি ও ভাঙচুরের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। মামলাটি গত কয়েক মাস আগে পার্শ্ববর্তী চরম্বা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. কালু দায়ের করেছিল। তাকে গ্রেফতারের জন্য গেলে সে এক পুলিশের হাতে দায়ের কোপ দিয়ে পালিয়ে যায়।
চেয়ারম্যান কানান, লালাখিল গ্রামের পাশেই পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি অঞ্চল। পুলিশের ওপর হামলা করে দ্রুত পাহাড়ি এলাকায় লুকিয়ে পড়ে। পুলিশ তাকে গ্রেফতারে চেষ্টা করছে।
সকাল থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। শিবলী নোমান বলেন, ‘পুলিশ সদস্যকে আহত করার ঘটনায় জড়িতকে গ্রেফতারে র্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযান চলছে। আমরা বর্তমানে অভিযানে আছি।’
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক বলেন, ‘আহত পুলিশ সদস্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত আসামিকে গ্রেফতারে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।’
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।