কর্মসংস্থান বদলে দিচ্ছে অসহায় নারীদের জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক
শামসুজ্জোহা সুজন , উপজেলা প্রতিনিধি, (ভূরুঙ্গামারী) কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৪ই ডিসেম্বর ২০২১ ০২:৩৯ অপরাহ্ন
কর্মসংস্থান বদলে দিচ্ছে অসহায় নারীদের জীবন

কর্মসংস্থানের সুযোগ বদলে দিচ্ছে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর অবহেলিত অসহায় নারীদের জীবনধারা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে এসব নারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তাঁরা সড়কের সোল্ডার ও স্লোপে মাটি ভরাট করেন। 



স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ভূরুঙ্গামারী উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচী (আর.ই.আর.এম.পি)-৩ ও চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক দল (এলসিএস) কর্মসূচীর আওতায় ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্তা, পরিবার প্রধান নারী ও ভূমি স্বত্ত্বহীন ১৪৬ জন অবহেলিত অসহায় নারী সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করেন। 


রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত ভূরুঙ্গামারীর নলেয়া গ্রামের আরজিনা বেগম জানান, ‘রাস্তার কাজ করে মাসে ছয় হাজার টাকা পাই। এছাড়া প্রতি মাসে ব্যাংকে তিন হাজার টাকা জমা হয়। জমানো ওই টাকা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।’ একই গ্রামের সামিনা আক্তার ও শাহিনা বেগম জানান, ‘আগে খেয়ে না খেয়ে কষ্টে দিন কাটতো। রাস্তার কাজ পাওয়ায় সেই কষ্ট দুর হয়েছে।’ কামাত আঙ্গারীয়া গ্রামের লাইলি বেগম ও নুরনাহার বেগম জানান, ‘ধার-দেনা করে সংসার চলাতে হতো। কাজ পেয়ে ধার-দেনা মুক্ত হয়েছি।’


তাঁরা আরো জানান, ‘যখন কাজ ছিল না তখন আমাদের কোন দাম ছিল না, কেউ খোঁজ-খবর নিতেন না। অনেকে আমাদের মানুষই মনে করতো না, এখন তাঁরাই আমাদের তাঁদের বাড়ির অনুষ্ঠানে যেতে দাওয়াত দেয়।’স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রকৌশলী এন্তাজুর রহমান জানান, ‘উপজেলার প্রায় ১৪২ কি.মি পাকা সড়ক ও ১৮৪ কি.মি কাঁচা সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচীতে দৈনিক ২৫০ টাকা মজুরিতে ১০০ জন এবং চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক দল (এলসিএস) কর্মসূচীতে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরিতে ৪৬ জন নারী কাজ করছেন। এতে তাঁদের পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছতা এসেছে। পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচীর প্রত্যেক কর্মীর ব্যাংক হিসাবে দৈনিক ৮০ টাকা এবং চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক দল (এলসিএস) কর্মসূচীর প্রত্যেক কর্মীর ব্যাংক হিসাবে দৈনিক ১০০ টাকা জমা হয়। তিন বছরের মেয়াদ শেষে তাঁরা সঞ্চিত অর্থ লাভ সহ ফেরত পাবেন।’