পরকালে যার আমলনামা ভালো হবে সে মুক্তি পাবে। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরকালের প্রস্তুতি গ্রহণ ও শাফায়াত পেতে উম্মতের শিক্ষা লাভে তাঁর পরিবার, আপনজনসহ বংশধরদের উদ্দেশ্য গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তাআলা কুরআনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিকটাত্মীয়দের ব্যাপারে সতর্ক করে বলেন, (হে রাসুল) আপনি আপনার নিকটাত্মীয়দের সতর্ক করুন।’ আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ পরিবার, বংশ ও আত্মীয়-স্বজনকে এ মর্মে সতর্ক করেন যে, ‘কেয়ামতের দিন আমি তোমাদের কোনো উপকার করতে পারবো না।’ হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, যখন সুরা শুআরার ২১৪নং আয়াত নাজিল হয়- ‘(হে রাসুল!) আপনি আপনার নিকটাত্মীয়দের সতর্ক করুন।’
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়িয়ে (ধারাবাহিকভাবে নাম ডেকে) ঘোষণা করলেন-
> হে কুরাইশ সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর (একত্ববাদ ও ইবাদতের) জন্য নিজেদের প্রস্তুত কর। আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো বিষয়ে কাজে আসতে পারবো না।
> হে বনি আবদে মানাফ! আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো বিষয়ে কাজে আসতে পারবো না।
> হে আব্দুল মুত্তালিবের পুত্র আব্বাস! আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো বিষয়ে কাজে আসতে পারবো না।
> হে রাসুলের ফুফু সাফিয়্যাহ! আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো বিষয়ে কাজে আসতে পারবো না।
> হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যা ফাতেমা! তুমি আমার সম্পদ থেকে যা ইচ্ছা নিয়ে নাও। আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো বিষয়ে কাজে আসতে পারবো না।’ (বুখারি)
অতঃপর আল্লাহ তাআলা এ ঘোষণা দিতে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি আয়াত নাজিল করেন-
‘আর মুমিনদের মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ করে, তাদের প্রতি তোমার বাহুকে অবনত কর। তারপর যদি তারা তোমার অবাধ্য হয়, তাহলে বল, তোমরা যা কর, নিশ্চয় আমি তা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। আর তুমি মহাপরাক্রমশালী পরম দয়ালু (আল্লাহর) ওপর ভরসা কর। যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি (নামাজে) দণ্ডায়মান হও এবং সেজদাকারীদের মধ্যে তোমার ওঠা-বসা। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা মহাজ্ঞানী।’ (সুরা শুআরা : আয়াত ২১৫-২২০)
এ কারণেই মানুষের উচিত দুনিয়ার সব কাজ মহান আল্লাহর জন্য সম্পাদন করা। অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়। আল্লাহ নির্দেশ দেন-
‘(হে রাসুল!) আপনি বলুন, নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার কুরবানি (সব ইবাদত), আমার জীবন ও আমার মৃত্যু বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য।’ (সুরা আনআম : আয়াত ১৬২)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি তার বংশধর, চাচা, ফুফু, কন্যার ব্যাপারে এত কঠোর সতর্ক বার্তা দিতে পারেন তবে মুসলিম উম্মাহর জীবন-যাপন কেমন হওয়া উচিত।
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর একত্ববাদ ও ইবাদতের ব্যাপারে গুরুত্ব বুঝাতেই নিজ বংশধর, চাচা, ফুফু, মেয়ের কথা উল্লেখ করেছেন।
সুতরাং মুসলমানের উচিত আল্লাহর নাফরমানি না করে শিরকমুক্ত ঈমানের সঙ্গে নেক আমল ও ইবাদতে একনিষ্ঠ হওয়া। তবেই প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুপারিশ উম্মতে কাজে আসবে। তিনিও তার উম্মতের জন্য শাফায়াত করবেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শিরকমুক্ত ঈমান লাভ ও তার ইবাদত-বন্দেগিতে নিজেদের নিয়োজিত করার তাওফিক দান করুন। হাশরের ময়দানে হাদিসে ঘোষিত সব ধরনের শাফায়াত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।