প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ১০:১৫
মানুষ যত আধুনিক হচ্ছে, ততই অশান্তি তাকে ঘিরে ধরছে। প্রযুক্তির উৎকর্ষতা, জীবনের বিলাসিতা, সমাজে চাকচিক্য—সবই বেড়েছে। কিন্তু আত্মিক প্রশান্তি যেন মানুষের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। এই অবস্থায় ইসলামের মৌলিক শিক্ষাগুলোতে ফিরে যাওয়াই একমাত্র পরিত্রাণের পথ। কুরআনের ভাষায়, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহর স্মরণেই অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়’ (সূরা রা’দ, আয়াত ২৮)।
আমরা যদি চারপাশে তাকাই, দেখতে পাব সমাজে অন্যায়, অবিচার, লোভ, হিংসা, প্রতারণা—এসব বেড়েই চলেছে। অথচ ইসলামী জীবনব্যবস্থায় এইসব সমস্যার প্রতিকার অত্যন্ত পরিপূর্ণভাবে দেওয়া হয়েছে। কুরআন মানুষকে ন্যায়, সততা ও সহমর্মিতার শিক্ষা দেয়। যারা এই শিক্ষাকে জীবনের মূলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করে, তাদের জীবন হয় আলোকিত ও শান্তিময়।
কুরআন মানুষকে আত্মশুদ্ধির পথে ডাকে। কুরআনের ভাষায়, ‘যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করল, সে সফল হলো’ (সূরা আশ-শামস, আয়াত ৯)। এই পরিশুদ্ধি কেবল বাহ্যিক নয়; বরং মন, চিন্তা ও কর্মেও পরিশুদ্ধ হওয়ার নির্দেশ দেয়। একজন প্রকৃত মুসলমান কুরআনের আলোকে তার প্রতিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, প্রতিটি কাজ পরিচালনা করে।
আজকের বিশ্বে মুসলমানদের দীন থেকে বিচ্যুতি এবং কুরআনের নির্দেশনা ভুলে যাওয়ার কারণেই অধিকাংশ মুসলিম সমাজে অস্থিরতা বিরাজ করছে। অনেকে ইসলাম মানেন ঠিকই, কিন্তু কুরআনের অনুশাসন তাদের জীবনে নেই। নামাজ পড়েন, রোজা রাখেন, কিন্তু জীবনের বাকি দিকগুলো কুরআনের আলো থেকে বঞ্চিত।
কুরআন শুধুমাত্র ইবাদতের পথ দেখায় না, এটি অর্থনীতি, রাজনীতি, বিচারব্যবস্থা, পারিবারিক সম্পর্কসহ জীবনের সব ক্ষেত্রে সুষ্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান করে। যদি আমরা কুরআনকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে সমাজ থেকে অন্যায়, দারিদ্র্য ও দুর্নীতি দূর হবে।
নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি—যদি তা মজবুতভাবে ধারণ করো, কখনও পথভ্রষ্ট হবে না। একটি হলো আল্লাহর কিতাব এবং অপরটি আমার সুন্নাহ।’ (সহীহ মুসলিম)। তাই ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র—সবক্ষেত্রে কুরআনের নির্দেশনা অনুসরণ করাই প্রকৃত মুসলিম জীবনের পথ।
আজ, যখন মানুষ হতাশা ও অস্থিরতার মধ্যে দিন পার করছে, তখন একমাত্র কুরআনের আলোই হতে পারে আমাদের মুক্তির দিশারী। আমাদের উচিত কুরআন তিলাওয়াত করা, বোঝার চেষ্টা করা এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তা বাস্তবায়ন করা। তবেই শান্তি আসবে, সুস্থ সমাজ গড়ে উঠবে।