আরাফার খুতবায় ঐক্যের ডাক শায়খ সালেহর

হজের অন্যতম ফরজ দায়িত্ব আরাফায় অবস্থান পালনের উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার (৫ জুন, ৮ জিলহজ) ভোর থেকে লাখ লাখ হাজি আরাফার ময়দানে পৌঁছাতে শুরু করেন। পবিত্র আরাফার ময়দানে হাজিরা দোয়া, ইবাদত এবং জিকিরে সময় কাটান। ইসলামে এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেননা এখানেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেছিলেন।

আরাফার ময়দান, জাবালে রহমত ও তার আশপাশের সমতল ভূমিতে হাজিদের জড়ো হওয়া হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। ফজরের আগেই হাজার হাজার মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়ে যান। সৌদি কর্তৃপক্ষ হাজিদের দিনের উত্তপ্ত সময়ে (সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা) বাইরে না থাকার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে তারা সূর্যের প্রখরতা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারেন।

সূর্যাস্তের পর হাজিরা আরাফা থেকে মুজদালিফার উদ্দেশ্যে রওনা হন। মিনার সঙ্গে আরাফার মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত মুজদালিফায় রাত কাটিয়ে তারা শয়তানকে প্রতীকীভাবে পাথর নিক্ষেপ করার জন্য পাথর সংগ্রহ করেন।

১০ জিলহজ তারিখে তারা বড় শয়তানকে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করেন এবং কোরবানি সম্পন্ন করেন। এরপর মাথা মুণ্ডানো বা চুল ছেঁটে ইহরাম খোলার মাধ্যমে ইহরামমুক্ত হন। এই পর্ব হজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা মুসলমানদের আত্মত্যাগ ও আনুগত্যের চেতনার প্রতীক।

পরবর্তীতে হাজিরা কাবা শরিফে ‘তাওয়াফে জিয়ারত’ করেন এবং সাফা-মারওয়ায় সাঈ সম্পন্ন করেন। ১১ জিলহজ ও ১২ জিলহজ তারিখে তিনটি শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপের মাধ্যমে রমির পর্ব সম্পন্ন হয়। কেউ কেউ ১৩ জিলহজ পর্যন্ত মিনা থেকে না ফিরে শেষদিন রমি সম্পন্ন করে তবেই ফিরে যান।

এই সুবৃহৎ ধর্মীয় আয়োজন সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে সৌদি কর্তৃপক্ষ ব্যাপক নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পবিত্র হজ পালন করতে এসে বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমানের জন্য এটি একটি আত্মশুদ্ধি, ত্যাগ ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।