জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর ভাষণ: বহু রাষ্ট্রপ্রধান কক্ষ ত্যাগ করলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৭শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:০৪ অপরাহ্ন
জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর ভাষণ: বহু রাষ্ট্রপ্রধান কক্ষ ত্যাগ করলেন

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ভাষণ দেন, তবে তার মঞ্চে ওঠার পর সেখানে উপস্থিত অনেক রাষ্ট্রপ্রধান এবং তাদের প্রতিনিধিরা কক্ষ ত্যাগ করেন। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এ ভাষণ দেন নেতানিয়াহু, যা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।


প্রতিবেদন অনুযায়ী, অধিবেশন শুরু হলে প্রথমে তুরস্কের স্থায়ী দূত কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। এরপর একে একে অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরাও নেতানিয়াহুর বক্তব্যের সময় কক্ষ ত্যাগ করতে শুরু করেন। এতে দেখা যায়, নেতানিয়াহুর ভাষণ চলাকালীন বেশিরভাগ আসন খালি পড়ে আছে।


নেতানিয়াহু প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে বক্তব্য দেন, যেখানে তিনি হামাস ও হিজবুল্লাহর কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি দাবি করেন, "যতদিন পর্যন্ত হামাস এবং হিজবুল্লাহ তাদের লক্ষ্য অর্জন না করবে, ততদিন যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।" তার এই বক্তব্য বিশ্ব জুড়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।


এদিকে, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে তার ভাষণ প্রত্যাখ্যানের জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, "নেতানিয়াহু ৪১ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছেন। তার জাতিসংঘে ভাষণ নয়, বরং কারাগারে থাকা উচিত।"


সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার রিপোর্ট অনুযায়ী, আরব বিশ্বের প্রতিনিধিরাও নেতানিয়াহুর বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক সমাজে ইসরায়েলের নীতির প্রতি অসন্তোষের প্রকাশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।


নেতানিয়াহুর ভাষণ শুরু হওয়ার পরপরই সাধারণ পরিষদের সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে দেখা যায়, কক্ষের বেশিরভাগ আসন খালি পড়ে আছে। এ ঘটনা জাতিসংঘের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মোড় হিসেবে গণ্য হচ্ছে, যেখানে এক নেতা তার বক্তব্যের সময় এত সংখ্যক রাষ্ট্রপ্রধানের চলে যাওয়া একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতীক।


বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নেতারা এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো নেতানিয়াহুর বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন, যা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা আগামী দিনগুলোতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পরিবর্তনকেও ইঙ্গিত করছে।


এভাবে নেতানিয়াহুর ভাষণ এবং তার প্রতি আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ইসরায়েলের গৃহীত নীতির প্রতি আরও বেশি নজর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে। এটি একটি সংকটের সময়, যেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জরুরি প্রয়োজন।